Advertisement
Advertisement
অন্তঃসত্ত্বা

করোনা আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বা স্বাস্থ্যকর্মী, পাশে দাঁড়াল না কেউ, বাড়ির বাইরে বিক্ষোভ প্রতিবেশীদের

প্রতিবেশীদের আচরণে স্তম্ভিত স্বাস্থ্যকর্মী।

Corona infected Shiliguri pregnant health worker, nativis protest outside of her house
Published by: Sucheta Chakrabarty
  • Posted:June 5, 2020 8:52 pm
  • Updated:June 6, 2020 8:41 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিলিগুড়ি ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্টের ( Lab assistant) শরীরে থাবা বসাল করোনা ভাইরাস। মারণ রোগের বিরুদ্ধে সামনের সারিতে থেকে লড়াই চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা মহিলার সংক্রমণের খবর মুছে দিল প্রতিবেশীদের সব সহানুভূতি। উলটে তাঁর বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান প্রতিবেশীরা। এমনকি তারা পুলিশকে বাধ্য করেন মহিলার স্বামীকে কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে যেতে।

করোনা সংক্রমণ শুধু শরীর নয় প্রভাব ফেলছে আক্রান্ত ও তাঁর প্রতিবেশীদের মনে। এই মারণ ভাইরাসের ভয় মানুষের মন থেকে দূর করছে মানবিক গুণগুলি। ক্রমে সংকীর্ণতার পথে ঠেলে দিচ্ছে মানুষকে। কোনও বাড়ির মহিলা অন্তসত্ত্বা হলে আগে পাড়ার প্রতিবেশীরা খোঁজ খবর নিতে এগিয়ে আসতেন। কিন্তু আজ কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলার শরীরে করোনার নমুনা পেলে তাঁর দিকে সহানুভূতি তো দূরের কথা, তীর্যক দৃষ্টিতে তাকান সকলে। সেরকমই এই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলেন শিলিগুড়ির শক্তিগড়ের বাসিন্দা পেশায় সরকারি ল্যাবরেটরির অ্যাসিস্ট্যান্ট। ওই মহিলা শিলিগুড়ির জেলা হাসপাতালে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টের পদে থেকে সোয়াব সংগ্রহ করতেন। সেই কাজ করতে গিয়ে তিনিও রক্ষা পাননি করোনার সংক্রমণ থেকে। তবে এই ঘটনা জানার পর বুধবার একদল প্রতিবেশী তাঁর বাড়িতে বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশকে একপ্রকার বাধ্য করে তাঁরা মহিলার স্বামীকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠান। এমনকী, তাঁর দুই বয়স্ক আত্মীয়ের সোয়াব পরীক্ষার জন্য দিনভর মহিলার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা সোয়াব সংগ্রহ করার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

Advertisement

[আরও পড়ুন:বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ৬০ হাজারের গণ্ডি, মৃত ৮১১]

সরকারি ল্যাবরেটরির এই অন্তসত্ত্বা মহিলা কর্মীকে প্রথমে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পরে ১৮ মে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের করোনা ক্লিনিকে বদলি করা হয়। বুধবার সেখানেই তাঁর সোয়াব পরীক্ষা করে শরীরে করোনা ভাইরাসের সন্ধান মেলে। এমনকী, তাঁর দুই বছরের সন্তানের শরীরেও করোনার নমুনা মেলে। তিনি অন্তঃসত্ত্বা এটা জানা সত্ত্বেও করোনা যুদ্ধে প্রথমের সারিতে থেকে লড়াই চালাচ্ছিলেন। সেই কাজে তাঁকে উৎসাহ দেন তাঁর স্বামী। জানা যায়, করোনা সংক্রমণের ভয়ে এই মহিলা দীর্ঘদিন নিজের ২ বছরের সন্তানকে ছেড়ে দূরে ছিলেন। সম্প্রতি ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে দেখতে বাড়ি ফেরেছিলেন। এরপরই মহিলা করোনা পজিটিভ হওয়ার রিপোর্ট পান। তাতেই আতঙ্ক ছড়ায় শক্তিগড় এলাকায়। মহিলার স্বামীর বিরুদ্ধে পাড়ায় বেরিয়ে ঘোরোফেরা করারও অভিযোগ ওঠে। তারজেরেই এদিন সকালে মহিলা কর্মীর শ্বশুরবাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান প্রতিবেশীরা। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে স্বামী ফুলবাড়িতে চলে গেলেও শক্তিগড়ের বিক্ষোভকারীরা সেখানেও ফোন করে স্থানীয় ক্ষিপ্ত করে তেলোন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে মহিলার স্বামীকে আটক করে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠায়।

[আরও পড়ুন:দু’দিন পেটে দানা পড়েনি, সর্বস্বান্ত হয়ে ত্রিপুরা থেকে বাংলায় ফিরলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা]

মহিলাকে হেনস্থার কথা জানতে পেরে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক গৌতম দেব ঘটনাস্থলে যান। তিনি গিয়ে স্থানীয়দের আচরণের তীব্র নিন্দা করেন। তবে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করেও প্রতিবেশীদের এই আচরণকে নিজের ভাগ্য বলেই মেনে নেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement