ফাইল ছবি
স্টাফ রিপোর্টার: আবারও যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব। ২০২০ সালের ২২ মার্চ। রবিবার। দেশ সাক্ষী ছিল ‘জনতা কারফিউ’য়ের। করোনার আতঙ্ক সেই শুরু। ঠিক এক বছরের মাথায় আবারও ফিরছে সেই ভয়। ভয় যে অমূলক নয়, তা আরও স্পষ্ট স্বাস্থ্যদপ্তরের নির্দেশে। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে কলকাতা-সহ রাজ্যের সব কোভিড হাসপাতালকে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শয্যা সংখ্যা বাড়াতে বলা হয়েছে। সব জেলাকে আগামী তিনদিনের মধ্যে গড়ে একহাজার পরীক্ষা শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের ফুলবেঞ্চ রাজ্যে এসেছে। তার আগে সোমবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে করোনা পরীক্ষার (Coronavirus) উপর গুরুত্ব দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রয়োজনে কন্টেনমেন্ট জোনের মতো অবস্থা হয়েছে কি না, তাও দেখতে বলা হয়েছে। আর প্রায় একই সময়ে রাজ্যের সব কোভিড (COVID-19) হাসপাতালকে তৈরি থাকতে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। স্বাস্থ্যসচিব সৌমিত্র মোহনের নির্দেশে বলা হয়েছে, “গত কয়েক সপ্তাহে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ অনেকটাই বেড়েছে। তাই করোনা রোগীরা যাতে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে ভরতি হতে পারেন, তার সব ব্যবস্থা তৈরি রাখতে হবে।”
জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তী এদিন বলেন, “বিভিন্ন রাজ্যে করোনার সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। রাজ্যেও সংক্রমণ গত কয়েকদিনে অনেকটাই বেড়েছে। এই অবস্থায় করোনা পরীক্ষায় কোনও শৈথিল্য দেখালে চলবে না। সামান্য জ্বর-সর্দির সমস্যা থাকলেও সরকারি হাসপাতালে নিখরচায় লালারস পরীক্ষা (Swab Test) করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে প্রয়োজনে হাসপাতালে ভরতি হতে হবে।” জোর দেওয়া হয়েছে বয়স্কদের টিকাকরণের উপর।
তথ্য বলছে, এদিন রাজ্যে (West Bengal) নতুন সংক্রমণ ৩৬৮ জন। মৃ্ত্যু হয়েছে ২ জনের। দেশে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬,৯৫১জন। অর্থাৎ করোনাগ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। তাই এদিন স্বাস্থ্য ভবনের ভিডিও কনফারেন্সে ধরে ধরে সব কোভিড হাসপাতালের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কোন হাসপাতালে কত শয্যা? কতগুলি সিসিইউ বা আইসিইউ রয়েছে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয়। করোনার ওষুধ ও অক্সিজেনের মজুত বাড়াতে বলা হয়। কয়েকটি এলাকায় রোগী বাড়ছে তাই প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে বেসরকারি সংস্থা থেকে সামগ্রী সংগ্রহ করে অবস্থা সামাল দিতে বলা হয়েছে। যেসব স্বাস্থ্যকর্মী চিকিৎসক ও নার্স গত একবছরের বেশি সময় কোভিড ওয়ার্ডে কাজ করেছেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনতে বলা হয়েছে। নার্সদের ফের প্রশিক্ষণ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞদের ফের নিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এদিনের নির্দেশে।
স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, কলকাতা, হাওড়া, দুই চব্বিশ পরগনা জেলায় সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। তথ্য বলছে গতবছর এই সময়ে এই চার জেলাতেই সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। তাই দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে তা এই চার জেলায় পরীক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এদিন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে মোট ১৬,০০৮টি পরীক্ষা হয়েছে। আলোচনায় স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানিয়েছেন, “পরীক্ষা কম হচ্ছে। তাই অ্যাকটিভ করোনা রোগী কম। অবিলম্বে পরীক্ষা বাড়াতে হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.