ছবি মুকলেসুর রহমান।
অর্ক দে, বর্ধমান: আরও একটা বছর কেটে গেল। কিন্তু এবারও এল প্রেমপত্র। এল না তত্ত্বের ডালি। আর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে সেই ডালি হাতবদলের সময় কারোর কারোর মন বদলও হয়ে যায়। কিন্তু দু’বছর ধরে সেই মন বদলের চিত্রনাট্যে ‘ভিলেন’ হয়েছে করোনা। ২০২১ সালের পর ২০২২ সালেও একই ছবি দেখা গেল বর্ধমানে। এবার তো হস্টেল নমো নমো করে পুজো সারলেন পড়ুয়ারা। রইল না থিমের বৈচিত্র্যও।
বাগদেবীর আরাধনা বাংলার ঐতিহ্য। বাঙালি ছাত্রছাত্রীদের আবেগ। একুশে পা দেওয়ার আগে বছরে মাত্র একটি দিনই তো অবাধ স্বাধীনতা। বাসন্তী শাড়ি, হলদে পাঞ্জাবির ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা, আড়চোখ, আলতো উদাসী হাসি, মা সরস্বতীর পায়ের কাছে রাখা কলম তুলে দু’লাইন কবিতা গুঁজে দেওয়া পাঞ্জাবির পকেটে – এসব দৃশ্যের কোলাজে চোখের সামনে দানা বাঁধে এক রসায়ন। তা প্রেম না অন্য কিছু, সে বিচার না হয় তোলা থাক ভাবী সময়ের জন্য।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় আবার একধাপ এগিয়ে। সরস্বতী পুজো অর্থাৎ বাঙালির প্রেমদিবসের পরদিন এখানকার ছাত্রাবাস আর ছাত্রী আবাসের মধ্যে তত্ত্ব বিনিময় হয়। একেবারে ঢাকঢোল পিটিয়ে বর-কনের বাড়ির মতোই ছাত্রী আবাস থেকে ছাত্রাবাস এবং ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রীদের আবাসে নিয়ে যাওয়া হয় উপহারের ডালি। এমন দিন তো বছরে একবারই আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় শুরুর দিন থেকেই এই রীতি চলে আসছে। কিন্তু করোনা কাঁটায় ছেদ পড়েছে সেই ঐতিহ্যে।
এবার সরস্বতী পুজোর দিন তিনেক আগে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-সহ হোস্টেল খোলার অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাই পুজোর আয়োজনের সময় ছিল বড্ড কম। এর মধ্যে মণ্ডপের থিম ঠিক করা, সেই অনুযায়ী মণ্ডপ তৈরি করা সম্ভব ছিল না বলছেন পড়ুয়ারা। দূর-দূরান্তের পড়ুয়ারা এখনও হস্টেলে এসে পৌঁছয়নি। ফলে তত্ত্ব আদানপ্রদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাও সম্ভব ছিল না। এবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে নমো নমো করে সারতে হল বাগদেবীর আরাধনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.