ফাইল ছবি।
রাজা দাস, বালুরঘাট: হিলি সীমান্তে এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়লেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তাঁকে ১৪ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। পাশাপাশি, সাংসদের অভিযোগ, তৃণমূলের মহিলা বাহিনী পাঠিয়ে তাঁকে হেনস্তা করা হয়েছে। এনিয়ে তিনি রাজ্যপালের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন। বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক মহলে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা নাগাদ বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার তাঁর গাড়িতে দুই সঙ্গীকে নিয়ে সীমান্তবর্তী হিলির গ্রামগুলির উদ্দেশে রওনা দেন। লকডাউনে সেই এলাকার মানুষদের সমস্যার কথা শুনে তিনি পদক্ষেপ নেবেন বলে পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বালুরঘাট শহরের মঙ্গলপুরে ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সামনে পুলিশের নাকা চেকিং চলাকালীন তাঁর গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। কোনওভাবে সাংসদকে হিলির অভিমুখে যেতে দেওয়া যাবে বলে জানান পুলিশ আধিকারিকরা। পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদ করে সাংসদ বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে জানান রাজ্যপালের কাছে। কিন্তু তারপরেও তাঁকে ব্যারিকেড পার হতে দেয়নি পুলিশ। তাতে তিনি ব্যারিকেডের সামনের রাস্তায় ধরনায় বসেন।
দুপুরে স্থানীয় কয়েকজন মহিলা এসে সাংসদকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। লকডাউনের মধ্যে সাংসদ বেরিয়েছেন কেন, সেই প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। ধরনা চলাকালীন বিকেলে সাংসদের কাছে একটি চিঠি পাঠান বালুরঘাট মহকুমা শাসক। সেই চিঠিতে মহকুমা শাসক জানান, সাংসদকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। কেননা তিনি নিয়মিত কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে ঘোরাফেরা করছেন। এরপরেই সারাদিনের এই ঘটনা উল্লেখ করে সাংসদ সুকান্ত মজুমদার রাজ্যপালকে জানান। তবে কোনওভাবে তাঁকে এদিন হিলির অভিমুখে যেতে দেওয়া হয়নি।
সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, “পুলিশ প্রশাসন তৃণমূলের নির্দেশে এই ধরনের ভূমিকা পালন করল। এমনি তৃণমূলের মহিলা বাহিনী পাঠিয়েছিল আমাকে হেমস্থা করতে। অথচ তৃণমূল জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ আগের দিন বর্ডারের গ্রামে গ্রামে গিয়েছিলেন। তাঁকে কীভাবে যেতে দেওয়া হল? আমি বিস্তারিত জানিয়েছি রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে।” তিনি আরও জানান, “২৩ মার্চ দিল্লি থেকে আসার পর আমার ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ হয়েছে। তারপরেও মহকুমা শাসক একটি চিঠি পাঠিয়ে বলেন আমাকে আবার ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে প্রশাসন খোদ। আমি এনিয়ে আইনি জবাব দেন।”
তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা রাজ্য সভার সাংসদ অর্পিতা ঘোষ বলেন, “আমি বর্ডারের গ্রামগুলিতে গিয়েছিলাম জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে। সেই অনুমতি চিঠিটি আমার কাছে আছে। সুকান্ত বাবুও লিখিত আবেদন জানিয়ে অনুমতি নিক। তাহলেই বর্ডারে যেতে পারবেন। সাংসদ বলেই তিনি যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারেন না কিংবা যা খুশি করতে পারেন না।” ডিএসপি হেড কোয়াটার ধীমান মিত্র জানান, জরুরি ভিত্তির গাড়ি ছাড়া কাউকে যেখানে সেখানে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। কোন কোন গাড়ি কোথায় যাবে, পুলিশের কাছে সেই নির্দিষ্ট তালিকা রয়েছে। সে কারণে সাংসদের গাড়ি যেতে দেওয়া হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.