Advertisement
Advertisement

Breaking News

খুন

কসাই ডেকে স্ত্রীকে খুন, সিসিটিভিই হদিশ দিল কাটামুন্ডু কাণ্ডের ৩ অভিযু্ক্তের

সন্দেহের বশেই স্ত্রীকে খুনের ছক কষে মৃতার স্বামী।

Cops solve chopped head mystery, arrests 3 including husband
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:July 20, 2019 2:45 pm
  • Updated:July 20, 2019 2:47 pm  

অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: দু’দিনের মাথায় হাওড়ার বালির জেটিয়া ঘাটে মহিলা খুনের কিনারা করল পুলিশ। জানা গিয়েছে, বাড়িতে কসাই ডেকে স্ত্রীকে খুন করে উপেন্দ্র রজক। তারপর জবাই করে দেহ থেকে ধড়, মুন্ডু, দেহের ঊর্ধ্বাংশ, নিম্নাংশ সব আলাদা করে ফেলে দেওয়া হয় গঙ্গায়। আর সবটাই হয় গণেশ চ্যাটার্জি লেনে খুনির বাড়িতে। 

[আরও পড়ুনতৃণমূল কার্যালয়ে আগুন, তল্লাশির নামে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্তর বাড়িতে তাণ্ডব পুলিশের]

পুলিশের দাবি, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহেই এই খুন। হাওড়া পুলিশের ডিসি (নর্থ) অমিতকুমার রাঠোর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে গোটা ঘটনার বিবরণ দেন। তিনি জানান, খুনিদের ভরসা ছিল জোয়ারের জল। কিন্তু অবশেষে ভাঁটার টানই ধরিয়ে দিল যে ঘটনাটি খুন। আর সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে দেয় খুনিদের। এরপরই শনিবার মৃতার স্বামী উপেন্দ্র রজক ও তার সঙ্গী সেই কষাই দিলবর খান ও সাকলিন শেখকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরায় ভেঙে পড়ে অবশেষে খুনের কথা স্বীকার করে তিনজনই।

Advertisement

 জানা গিয়েছে, স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে এমন সন্দেহ অনেকদিন ধরেই ছিল উপেন্দ্রর। তার জেরে অশান্তি, বচসা লেগে থাকত। সেই কারণেই স্ত্রীকে খুনের ছক কষে অভিযুক্ত। পরিকল্পনা মাফিক বুধবার রাতে স্ত্রীকে খুন করে বৃহস্পতিবার ভোরে স্ত্রীর কাটা দেহ নিয়ে তাঁর স্বামী ও দুই সাগরেদ ফেলে আসে গঙ্গায়। তারপর থেকে বাড়ি ফিরে চলে স্ত্রীকে খোঁজার পালা। পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়। তার পর পাড়াময় মা আরতি রজকের সঙ্গে বেরিয়ে উপেন্দ্র বলে স্ত্রী ভোর থেকে নিখোঁজ। এতেই সন্দেহ হয় পুলিশের।

উপেন্দ্রর গতিবিধির উপর নজর রাখতে প্রথমেই সিসিটিভিতে চোখ রাখে পুলিশ। সিসিটিভি দেখার কারণ মূলত দু’টি। প্রথমত, উপেন্দ্রর অভিযোগ যদি সত্যি হত, সেই অনুযায়ী তার স্ত্রী মৃতা সোনির গতিবিধির হদিশ পাওয়া যেত। সোনি যদি না পালিয়ে থাকে, তবে অন্য ঘটনা ঘটলে তার সূত্রও মিলতে পারে। সেক্ষেত্রে উপেন্দ্র বা তার বাড়ির লোকের অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রমাণিত হবে। ঠিক সেই ঘটনাই ঘটল। জানা গেল, স্ত্রীকে কসাই ডেকে খুন করার কথা। জেটিয়া ঘাটের কাছে বৃহস্পতিবার ভোরে তিনজনকে একটি রিকশায় করে যেতে দেখা যায়। রিকশায় উপেন্দ্র, দিলবরের সঙ্গে ছিল সাকলিন শেখ নামে আরেকজন। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিত করে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: কাটমানি নিয়েছে প্রধান, অভিযোগ করে প্রহৃত কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য]

জেটিয়া ঘাট থেকে বৃহস্পতিবার সকালে সোনির দেহাংশ মেলে। প্রাথমিক জেরায় উপেন্দ্র জানিয়েছে, তারা জোয়ারের ভরসা করে দেহ গঙ্গায় ফেলে আসে। দিনের আলো ফুটে যাওয়ায় তারা দ্রুত সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। বুধবার মাঝরাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা পর্যন্ত ভাঁটা ছিল। উপেন্দ্ররা তার আগেই দেহ ফেলে চলে আসে। সেখানে ছিল সোনির কাটা মুন্ডু, একটি কালো কিট ব্যাগ ও আরেকটি কাপড়ের ব্যাগ। কিট ব্যাগে ছিল সোনির শরীরের ঊর্ধ্বাংশ, অন্য ব্যাগটিতে ছিল কসাইয়ের একাধিক অস্ত্র। তাতে ৩টি চপার, দু’টি ভিন্ন মাপের ছুরি। দেহের অন্য অংশের মধ্যে হাত ও পায়ের টুকরো পাওয়া যায়নি। খুনের পর ঘর ফিনাইল দিয়ে পরিষ্কার করা হয়।

জানা গিয়েছে, ঘটনা পুনঃনির্মাণ করা হবে খুনিদের সঙ্গে নিয়ে। তবে প্রাথমিকভাবে তারা জানিয়েছে, দেহ একেবারে লোপাট করে দেওয়ার জন্য কসাই ডেকে শরীরের বিভিন্ন অংশ ছিন্ন করে তবেই তা গঙ্গায় ফেলার উদ্দেশ্য ছিল তাদের। কিন্তু তাতে তারা শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারল না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement