ছবি: প্রতীকী
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: চুরির অভিযোগে ধৃতদের সঙ্গে নিয়ে এলাকায় ঘুরল পুলিশ। সকলের কাছে দু’জনকে ‘চোর’ বলে পরিচয়ও দেয় তারা। এই দু’জনের থেকে সাবধানে থাকার বার্তাও দেয় উর্দিধারী। মঙ্গলবার দুপুরে এমনই ঘটনা ঘটল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে।
একের পর এক দোকানে চুরির ঘটনায় ধৃতদের কোমরে দড়ি পরিয়ে দীর্ঘ সড়কপথে ঘোরালো পুলিস। উদ্দেশ্য, এলাকার সকল মানুষজনকে ধৃতদের চিনিয়ে দিয়ে সচেতন করে রাখা। চোর চেনাতে জামালপুর থানার পুলিসের এমন কৌশল প্রথমে সবাইকে হতবাক করে ঠিকই। পরে অবশ্য চোরেদের ছবি তুলে রাখা নিয়ে পথচারীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। জামালপুর থানার সন্নিকটে সড়কপথের ধারে চা, পান, বিডিসিগারেটের দোকান যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে ছোটখাট স্টেশনারি দোকান।
দিনদুয়েক আগে রাতেই ঘটনার সূত্রপাত। ওইদিন জামালপুরের তিনটি দোকানে ভিতরে ঢোকে চোর। দোকানগুলিতে থাকা বিভিন্ন সামগ্রী চুরি যায়। পরদিন সকালে দোকান খুলতেই চুরির ঘটনা জানাজানি হয়। থানায় অভিযোগ জানান ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ পেয়েই পুলিশ চোরেদের খোঁজ শুরু করে। মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যেই পুলিশ শেখ সাবির ও লব বেরা নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। ধৃত সাবির জামালপুর থানার সেলিমাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। লব থাকে পুলমাথা এলাকায়। জেরায় ধৃতরা দোকানে চুরির কথা স্বীকার করে নেয়। ধৃতদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী চুরি যাওয়া সামগ্রী উদ্ধারে নামে পুলিশ। সিগারেট, গুটখা ও সাবান উদ্ধার হয়।
এরপরই পুলিশকর্মীরা দুই চোরকে ‘সবক’ শেখানোর উদ্যোগ নেয়। কোমরে দড়ি বেঁধে জামালপুরে ঘোরানো হয় তাদের। পুলিশই রাস্তার লোকজনকে ডেকে ডেকে বলে, “দেখে রাখুন এই দুই যুবক চোর। রাতে এদের আপনার এলাকায় দেখলেই সচেতন হবেন। প্রয়োজনে পুলিশকে জানাবেন।” একথা শোনার পরই ছবি তোলার হিড়িক। দুই ‘চোরে’র ছবি তুলতে শুরু করেন সকলে। এবিষয়ে জামালপুর থানার পুলিশ আধিকারিক বলেন, “স্থানীয়রা যাতে সাবধান থাকেন, তাই ওই দু’জনকে এলাকায় ঘোরানো হয়।” বুধবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হবে। তবে আইনজীবীরা পুলিশের একাজের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁদের মতে, এ কাজ মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.