চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে প্রতিবাদীদের। অভিযোগ উঠেছে কুলটির রামপুর মোটর ভেহিক্যাল বিভাগ অর্থ্যাৎ এমভিআই কর্তাদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় গান্ধীগিরির কায়দায় প্রতিবাদ দেখালেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। হাতে ফুলের বোকে, কালো পতাকা, প্ল্যাকার্ড ও গেঞ্জিতে লেখা ‘কেস দেবেন না প্লিজ’। শয়ে শয়ে গ্রামবাসী রামপুর চেকপোস্টে এমভিআই কর্তাদের ঘেরাও করে আরও একটি স্মারকলিপি জমা দেন। তাতে কটাক্ষ করে লেখা “স্যার দুর্নীতি করুন। ওটা আপনাদের অধিকার। কিন্তু প্রতিবাদীদের কেস দেবেন না প্লিজ। তাই আগের দেওয়া ডেপুটেশন আমরা ফেরত নিতে এসেছি।” রাজ্য সরকারের মোটর ভেহিক্যাল বিভাগের বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচি হয়ে গেল রবিবার। এদিন গ্রামবাসীদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে রাজ্য যুব তৃণমূল সম্পাদক বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে দেখা যায় সামনের সারিতে। দু’নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন সালানপুর রোডের উপর কুলটি রামপুর চেকপোস্টে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন হয়।
রবিবার রামপুর চেকপোষ্টে গান্ধীগিরি করে ডেপুটেশন দিয়ে গেলেন বড়িরা, লছমনপুর, শবনপুর, চলবলপুরের বাসিন্দারা। দিন পনেরো আগে রামপুর এমভিআই কর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেলাশাসক ও পুলিশ কমিশানরকে ডেপুটেশন দিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপরেই দেখা যায় ডেপুটেশনে চার নম্বরে সাক্ষর থাকা মনোহর মণ্ডল নামে এক গ্রামবাসীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ২ আগস্ট। ডেপুটেশনে সাক্ষর থাকা অন্যদের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি অফিসে হামলা ও সরকারি কর্মীদের হেনস্তার অভিযোগ আনা হয়। দু’দিন আগে আদালতে থেকে জামিনে মুক্তি পান ওই গ্রামবাসী। এরপরেই রবিবার গ্রামবাসীরা ধৃত মনোহরের বৃদ্ধ মাকে নিয়ে হাজির হন এমভিআই কর্তাদের অফিসে। ফুল নিয়ে মহিলা ও পুরুষরা দেখা করতে চান এমভিআই কর্তাদের বিরুদ্ধে। যদিও পুলিশ ব্যারিকেড তৈরি করে তাঁদের আটকে দেয়।
গ্রামবাসীদের পক্ষে যুব তৃণমূল নেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, সরকারি অফিসারদের আমরা বলতে চাই, “স্যার আপনাদের হাত অনেক লম্বা। তাই আপনাদের সঙ্গে পেরে উঠলাম না। যাই হোক আগের ডেপুটেশনটি আমরা ফেরত নিতে এসেছি আর বলতে এসেছি কেস দেবেন না প্লিজ।” চিন্তামণি রায় নামে এক গ্রামবাসী কটাক্ষ করে বলেন, “ওনাদের অনেক দয়া অস্ত্র মামলা, গাঁজার মামলা ভাগ্যিস দেয়নি। নইলে জামিনই মিলতো না। তাই ধন্যবাদ জানাতে এসেছি।”
গ্রামবাসীদের অভিযোগ ভিন রাজ্য থেকে জাতীয় সড়ক হয়ে ওভারলোডিং অবস্থায় গাড়ি এরাজ্যে ঢুকছে। ওভারলোডিংয়ের ক্ষেত্রে জরিমানা হলেও তা সরকারি কোষাগারে ঢুকছে না। ঢুকছে এমভিআই কর্তাদের পকেটে। আর সেই ডেপুটেশন দেওয়ার পর স্থানীয় ওই যুবককে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয় পুলিশের সাহায্য নিয়ে। রামপুর এমভিআই ইনচার্জ জীবন্ত গুহ গ্রামবাসীদের ঢুকতে দেননি। গ্রামবাসীদের দেওয়া ফুল, মালা নিতে অস্বীকার করেন। তাঁকে প্রশ্ন করা হলে বলেন বড় কর্তারা যা বলার বলবেন। এমভিআই কর্তারা এদিন অভিযোগ তুলেন প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বহিরাগতদের আনা হয়েছিল। যদিও গ্রামবাসীর জানিয়েছেন ওনার স্থানীয় কয়েকজন দালাকে চেনেন। তাই ওদেরকেই ওরা গ্রামবাসী ভাবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.