সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তখন ভোর রাত, ঘড়ির কাঁটায় প্রায় ৩টে। হঠাৎ কড়া নাড়ার শব্দে ঘুম ভাঙে যোধপুর গার্ডেন নিবাসী রাজ দাসের। খাটে বসে তিনি শুনতে পান আশেপাশের সব ঘরেই একইরকম ভাবে কেউ কড়া নেড়ে চলেছে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেও যখন কড়া নাড়ার শব্দ চলতেই থাকে তখন বাধ্য হয়ে রাজবাবু ঘরের দরজা খুলে দেখতে পান, ততক্ষণে লাটাগুড়ির ওই রিসর্টের প্রায় সব ঘরের পর্যটকরাই উঠে পড়েছেন। কারণ হোটেলে এসে উপস্থিত হয়েছেন লাটাগুড়ি থানার মদপ্য এএসআই গোপাল চন্দ্র রায়। দরজা খোলা মাত্রই তিনি নানা রকমের আপত্তিকর প্রশ্ন করা শুরু করেন এবং ওই ভোর রাতেই পর্যটকদের ঘরের ভিতর ঢুকে তাদের পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলবেন ও তাদের ঘর তল্লাশি করবেন বলে দাবি করেন। তখন ওই এএসআই-এর সঙ্গী ছিলেন দুই সিভিক ভল্যান্টিয়ার। যাদের মধ্যে একজন সেই সময় মদপ্য গোপালবাবুকে আটকানোর চেষ্টা করলেও, অন্যজন গোপালবাবুর নির্দেশ মতোই মদপ্য অবস্থায় ওই রিসর্টের পর্যটকদের বিরক্ত করছিলেন।
পর্যটকরা অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিককে হাতজোড় করে পড়ে আসার অনুরোধ জানালে, তিনি বলেন “আমি এই এলাকার সুরক্ষার দায়িত্বে আছি, আমার যখন মনে হবে তখনই আমি আমার কাজ করব”। তখন তাঁরা জানান তাদের সঙ্গে ঘরে মেয়েরাও রয়েছে। এই মুহূর্তে ঘরে গেলে তাদের অসুবিধা হতে পারে, তাতে ওই মহিলাদের সম্পর্কেও কুমন্তব্য করেন ওই এএসআই। তখন বাধ্য হয়ে পর্যটকদের মধ্যে কয়েকজন রিসর্টের ম্যানেজারকে ডেকে পাঠান। ম্যানেজার এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলে ওই উর্দিধারী এএসআই তাঁকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ দিতে শুরু করে। এর মধ্যেই স্থানীয় থানার ওসি সেখানে এসে হাজির হন। তাঁর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে ওই মদপ্য এএসআই এবং সিভিক ভল্যান্টিয়ার সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। কিন্ত ততক্ষণে থানায় পর্যটকদের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ওই এএসআই-কে সাসপেন্ড করা হয়। ওই সিভিক ভল্যান্টিয়ারের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.