Advertisement
Advertisement
পরকীয়া

পরকীয়ার কাঁটা সরাতেই স্বামীকে খুন, পুলিশের উপস্থিতিতে ঘটনার পুনর্নির্মাণ ধৃত স্ত্রীর

কাটোয়ায় প্রেমিকের সহযোগিতায় স্বামীকে খুন করে স্ত্রী৷

Cop reconstructs Katwa murder scene today
Published by: Sayani Sen
  • Posted:July 20, 2019 6:16 pm
  • Updated:July 20, 2019 6:16 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল এলাকায় মেধাবী ছাত্র বলে পরিচিত নয়ন পাল। চাকরি একরকম পাকা। চাকরি পেলেই নয়নকে বিয়ে করার পরিকল্পনাও করে ফেলেছিল দুই সন্তানের মা শম্পা। কিন্তু পথের কাঁটা স্বামী। তাই প্রায় ১৫ দিন ধরে প্রেমিক নয়নের সঙ্গে স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা করে শম্পা৷ কিন্তু নয়নকে বেশি কিছু করতে হয়নি। শুধু সুজিতবাবুর হাত দুটো চেপে ধরতে হয়েছিল তাকে। বাকি কাজ নিজের হাতেই করেছিল শম্পা। প্রথমে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে নিজের হাতেই স্বামীর গলা টিপে ধরেছিল। দাঁতে দাঁত চেপে দু’হাতে স্বামীর গলা টিপে ধরেছিল শম্পা৷ শনিবার খুনের প্রক্রিয়া একেবারে অভিনয় করে দেখাল বর্ধমানের কাটোয়ার বিজয়নগরের পরকীয়ার জেরে খুন কাণ্ডে ধৃত শম্পা মণ্ডল ও তার প্রেমিক নয়ন পাল। এদিন ধৃতদের সঙ্গে নিয়ে মামলার পুনর্নির্মাণ  করল কাটোয়া থানার পুলিশ।

[ আরও পড়ুন: তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে জ্বলল বাইক, উত্তপ্ত পাথরপ্রতিমায় ইটের ঘায়ে জখম পুলিশ]

পুলিশের কাছে শম্পা জানায়, বুধবার রাতে ছেলে ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে শুয়েছিল। ঘরেই মেঝেতে শুয়েছিলেন তার স্বামী। বাড়িতে ঢোকার দুটি দরজা। সদর দরজায় রাতে তালা লাগিয়ে দেন শ্বশুর। খিড়কির দরজা দিয়ে ঢুকেছিল গৃহবধূর প্রেমিক নয়ন। তারপর ঘুমন্ত স্বামীর মুখে প্রথমে তিনি বালিশ চাপা দেন। সুজিত ছটফট করলে নয়ন হাত-পা চেপে ধরে। কিন্তু একসঙ্গে পাঁচটি ঘুমের ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় নিস্তেজ হয়ে যান সুজিত৷ তাই তাকে কাবু করতে বেশি বেগ পেতে হয়নি। মৃত্যু নিশ্চিত করতে স্বামীর গলা টিপে ধরে ওই গৃহবধূ। প্রথমে স্বামীর মৃত্যু হৃদযন্ত্রের সমস্যায় হয়েছে বলে চালানোর চেষ্টা করে শম্পা৷ তবে পুলিশি জেরায় ভেঙে পড়ে সে৷ সব স্বীকার করে নেয় শম্পা৷ বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় গৃহবধূ এবং তার প্রেমিককে৷ ধৃতদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশের পর শনিবার কাটোয়া থানার আইসি বিকাশ দত্ত ও ঘটনার তদন্তকারী অফিসার পঙ্কজ নস্কর-সহ বিশাল পুলিশবাহিনী ধৃতদের সঙ্গে বিজয়নগর গ্রামে যান। ঘটনার পুনঃনির্মাণ করা হয়।

Advertisement

নয়নের বাবা পরেশ পাল পুলিশের হোমগার্ড। কলকাতায় থাকেন। দুই ভাই। নয়ন বাংলা স্নাতকোত্তর পাশ। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হয়েছে সে। গৃহশিক্ষকতার সুবাদে বছর দুয়েক ধরে শম্পার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে নয়ন। ওই যুবকের দাবি, ‘‘আমি সুজিতকে খুন করতে চাইনি। শম্পা বারবার আমাকে প্ররোচিত করেছিল। বাধ্য হয়ে করেছিলাম।”

[ আরও পড়ুন: নেত্রীর বাড়িতে বোমাবাজি, প্রতিবাদে রাজ্য সড়ক অবরোধ বিজেপির]

নিহতের বাবা জ্যোতিষচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেকবার ওই সম্পর্ক ছেড়ে স্বামী সন্তানদের নিয়ে সংসার করার জন্য বউমাকে অনুরোধ করেছিলাম। গত দু’সপ্তাহ ধরে বউমা আমার ছেলেকে খুব যত্নআত্তিও করছিল। ভেবেছিলাম ও বোধহয় নিজের ভুল বুঝে শুধরে গিয়েছে। কিন্তু এত বড় কাজ করবে ভাবিনি।” পুলিশ নিহতের ঘর থেক দুটি বালিশ উদ্ধার করেছে। নয়ন এবং শম্পার মোবাইল দুটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে৷

দেখুন ভিডিও:

ছবি: জয়ন্ত দাস   

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement