Advertisement
Advertisement

আলতাফ মিঞার হাতে গড়া রাসচক্রেই উৎসবের বোধন কোচবিহারে

রাসমেলায় ব্রাত্যজনের স্বীকৃতি।

Coochbihar : This Muslim man used to prepare 'Raschakra' for Hindus
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 2, 2017 2:47 pm
  • Updated:November 2, 2017 3:59 pm  

মৃন্ময় লাহিড়ি, কোচবিহার: উৎসব কেন সর্বজনের তা বোঝাতে কিছু কিছু উদাহরণ যথেষ্ট। এই যেমন কোচবিহার রাসমেলা। উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম এই উৎসবের অন্যতম ঐতিহ্য রাসচক্র। যা ঘুরিয়ে বোধন হয় উৎসবের। এই রাসচক্র তৈরি করেন এক ছাপোষা মুসলমান। যার দায়িত্বে আলতাফ মিঞা। তিন পুরুষ ধরে রাসচক্র বানাচ্ছেন আলতাফ।

[মরশুমের প্রথম তুষারপাত ছাঙ্গুতে, উচ্ছ্বসিত পর্যটকরা]

Advertisement

এখন শেষ মুহূর্তের কাজে ব্যস্ত আলতাফ মিঞা। যে করেই হোক অন্তত দিন দুয়েক আগেই কাজ শেষ করে মদনমোহন বাড়ির প্রাঙ্গণে রাসচক্র বসাতে হবে। আর পুজোর পর এই রাসচক্র ঘুরিয়েই সূচনা হবে রাস উৎসবের। তিনি ছাড়া এ কাজ আর কেউই করতে পারবেন না। মিঞার তাই এখন দম ফেলার সময় নেই। পরিবারের বাকি সদস্যরাও তাঁর সঙ্গে হাত লাগিয়েছেন। হরিণচওড়ায় তোর্সা নদীর ধারের বাড়িতে দেখা গেল কাঁচি দিয়ে কাগজে নকশা বানানো চলছে। তারপর বাঁশ কেটে আঠা দিয়ে তাতে বসানো হচ্ছে কাগজ। বংশপরম্পরায় এই কাজটি বছরের এই সময় করে আসছে এই পরিবার। ব্যস্ততার মাঝেই আলতাফ মিঞা বলেন, লক্ষীপুজোর দিন উপোস থেকে রাসচক্র তৈরির কাজের সূচনা করেছি। এখন সব মিলিয়ে নিচ্ছি।

RASCHAKRA.jpg-2

রাজার আমল থেকেই রাসচক্র তৈরির কাজের দায়িত্বে এই পরিবার। যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক বড় উদাহরণ। রাসচক্রের মধ্যে ইসলাম ধর্মের মহরমের তাজিয়ার মিল খুঁজে পান কেউ কেউ। আবার বৌদ্ধধর্মের ধর্মচক্রের সাদৃশ্যও রয়েছে। জেলাবাসী মনে করেন সর্বধর্ম সমন্বয়ের প্রতীক কোচবিহারের এই রাসচক্র। রাস উৎসব মূলত হিন্দুদের হলেও রাসচক্র তৈরি করেন পানমামুদ মিঞার বংশধরেরা। পানমামুদের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র আজিজ মিঞা দায়িত্ব পান। আর বাবার প্রয়াণের পর তৃতীয় প্রজন্ম হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন আলতাফ। এখন তাঁর থেকে হাতে-কলমে সব শিখে নিচ্ছে ছেলে আমিনুর।

[মেয়েকে নিয়ে স্বেচ্ছায় ৬ বছর ধরে ঘরবন্দি মা]

প্রায় ২৯ ফুট উঁচু এই রাসচক্রে থাকে ৩২ জন দেবদেবীর ছবি। বর্তমানে কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের অস্থায়ী কর্মী আলতাফ মিঞা। কোচবিহার কেশব আশ্রমের নৈশপ্রহরীর তিনি কাজ করেন। কিন্তু গত কয়েক দিনে রাসচক্র নিয়েই আলতাফ মহাব্যস্ত। আলতাফ বলেন, প্রায় পঁয়ত্রিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাসচক্র তৈরি করছি। গতবছর থেকে ছেলেকে শেখাচ্ছি। এরপর তো ওকেই দায়িত্ব নিতে হবে। আমি থাকি বা না থাকি রাসচক্র তৈরির কাজ বন্ধ করা যাবে না। এই দায়িত্ববোধই বুঝিয়ে দেয় রাসচক্রর মাহাত্ম্য কেন এত গভীরে।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement