প্রতীকী ছবি।
বিক্রম রায় ও শান্তনু কর: ফের এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল রাজ্যে। একই দিনে মৃত্যু হল কোচবিহারের এক মহিলা ও জলপাইগুড়ির এক ব্যক্তির। জানা গিয়েছে, দুজনেরই নথিতে বেশ কিছু ভুল ছিল, কিন্তু প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও সেগুলো সংশোধন করতে পারছিলেন না। ফলে এনআরসি হলে ভবিষ্যৎ কী হবে সেই আতঙ্কেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তাঁরা।
কোচবিহার ১ নম্বরের ঘুঘুমারির হাওয়াগাড়ি এলাকার বাসিন্দা আরজিনা খাতুন। জানা গিয়েছে, ভোটার কার্ডে তাঁর নাম ছিল আরজিনা খাতুন। কিন্তু আধারে নাম ছিল আরজিনা খাতুন বিবি। একই সমস্যা ছিল তাঁর স্বামীর নথিতেও। তাঁর ভোটার কার্ডে নাম আনোয়ার মিঞা থাকলেও আধারে ছিল আনোয়ার হোসেন। ফলে তাঁরা আতঙ্কে ভুগছিলেন। নথি সংশোধনের জন্য বিডিও থেকে পঞ্চায়েত অফিস সব জায়গাতেই যান আরজিনা। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। পরে মঙ্গলবার সকালে ঘর থেকেই ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হন ওই মহিলা। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। মৃতের পরিবারের দাবি, এনআরসি আতঙ্কের জেরেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আরজিনা।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূল নেতৃত্ব কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপিকে। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি রাজ্যে এনআরসি আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে, সেই কারণেই এই একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। যদিও বিজেপির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন নিশীথ প্রামাণিক। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল দ্বিমুখী ভূমিকা নিচ্ছে বলেই এই পরিস্থিতি। অন্যদিকে, একই ঘটনা ঘটেছে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে। জানা গিয়েছে, অসমের নাগরিকপঞ্জি প্রকাশিত হওয়ার পর নথিতে ভুল থাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন সাবের আলি নামে এক যুবক। চেষ্টা করেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতে পারেননি তিনি। এরপরই কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে একই কারণে আত্মঘাতী হয়েছিলেন জলপাইগুড়ির বাসিন্দা শ্যামল রায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.