সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উন্নয়নের ছিটোফোঁটা নেই৷ সরকারের ভূমিকায় ক্ষুদ্ধ ছিটমহলের বাসিন্দারা৷ ক্ষোভ এতটাই যে, সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে পঞ্চায়েত ভোট বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কোচবিহারের ছিটমহলের বাসিন্দারা৷ ভোট নারাজ দিনহাটার কাচুয়া ছিট, দিনহাটা শিবির, তুফানগঞ্জের উত্তর বাঁশজানি, মাথাভাঙায় নলগ্রাম, নলগ্রাম খন্ড, নলগ্রাম মাইনর পার্ট, ফলনাপুর ছিটের একাংশ, জোংরা, ককোয়াবাড়ি, ভাণ্ডারদহ এবং হলদিবাড়ি শিবিরের বাসিন্দারা। অন্য ছিটমহলের বাসিন্দারাও পঞ্চায়েত ভোট বয়কট করার চিন্তা-ভাবনা করছেন বলে খবর৷ প্রসঙ্গত, ভারত ও বাংলাদেশ স্থলসীমা চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর, ওই ভূ-খণ্ডগুলি এখন ভারতের অংশ৷ সেখানকার বাসিন্দারা এদেশের নাগরিক৷
[বিজেপি প্রার্থীর মেয়েকে মারধরের অভিযোগে উত্তপ্ত বারুইপুর]
ছিটমহল আর নো-ম্যানস ল্যান্ডের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই৷ দুই দেশের সীমান্তের মধ্যবর্তী এক খণ্ড জমিতে যেমন কোনও দেশেরই অধিকার থাকে না, ছিটমহলই ঠিক তেমনি৷ কিন্তু, সমস্যা হল, ছিটমহল তো আর শুধু একখণ্ড জমি নয়, সেখানে যে মানুষও বসবাস করে! আর ভূ-খণ্ডটি যেহেতু কোন দেশের অন্তর্ভুক্ত নয়৷ তাই ছিটমহলের বাসিন্দারাও কোনও দেশের নাগরিক হন না৷ দেশভাগের সময়ে উত্তরবঙ্গের সীমান্তেও তেমনই কিছু ছিটমহল তৈরি হয়েছিল৷ পরবর্তীকালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন বাংলাদেশ রূপে আত্মপ্রকাশ করে৷ ভৌগালিকভাবে ওই ছিটমহলগুলি ভারত বা বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে ছিল৷ কিন্তু, সংশ্লিষ্ট দেশের অংশ ছিল না৷ তাই ছিটহমলবাসীদের দুর্দশাও কম ছিল না৷ নাগরিক পরিচয়পত্র তো দূরস্থান, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের মতো ন্যূনতম সরকারি পরিষেবাটুকু পেতেন না তাঁরা৷ অনুয়ন্ননের অন্ধকারে দিনযাপন করতেন ছোট ছোট এই ভূ-খণ্ডের হতভাগ্য বাসিন্দারা৷
[মনোনয়নের শেষ দিনে গুলি চলল মগরাহাটে, জখম ২ পুলিশকর্মী]
২০১৬ সালে স্থলসীমা চুক্তিতে সই করে ভারত ও বাংলাদেশ৷ দুই দেশের সীমানার মধ্যে থাকা ছিটমহলগুলি সংশ্লিষ্ট দেশের অন্তর্ভুক্ত হয়৷ কোচবিহারের ছিটমহলগুলির এখন ভারতের অংশ৷ এদেশের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার, ছিটমহলগুলির উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার৷ বাসিন্দাদের থাকার জন্য অস্থায়ী শিবির তৈরি করা হয়েছিল৷ সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ধাপে ধাপে ছিটমহলগুলির উন্নয়ন করা হবে৷ সরকারি প্রকল্পে পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে বাসিন্দাদের৷ কিন্তু, বাস্তবে কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ৷ কোচবিহারের ছিটমহলের বাসিন্দাদের অনেকেই এখনও টিনের ছাউনি দেওয়া অস্থায়ী শিবিরে থাকেন৷ তাঁদের অভিযোগ, দুই বছর পেরিয়ে গেলেও, অবস্থার কোনও হেরফের হয়নি৷ তাঁরা আগে যেমন ছিলেন, এখনও তেমনই আছেন৷ সরকারি উন্নয়নের ছিটেফোঁটাও পৌঁছয়নি এই প্রত্যন্ত জনপদগুলিতে৷ ছিটমহলের বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরকার তাঁদের সঙ্গে বঞ্চনা করেছে৷ তাই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না তাঁরা৷ ভোট দেবেন না৷ এই ভোট বয়কটে শামিল হয়েছেন কোচবিহারের দিনহাটার কাচুয়া ছিট, দিনহাটা শিবির, তুফানগঞ্জের উত্তর বাঁশজানি, মাথাভাঙায় নলগ্রাম, নলগ্রাম খণ্ড, নলগ্রাম মাইনর পার্ট, ফলনাপুর ছিটের একাংশ, জোংরা, ককোয়াবাড়ি, ভাণ্ডারদহ এবং হলদিবাড়ি শিবিরের বাসিন্দারা৷ শোনা যাচ্ছে, পঞ্চায়েত ভোট বয়কট করা নিয়ে অন্য ছিটমহলগুলিতেও আলোচনা চলছে৷
[পতাকা কিনতে ২০ টাকা! পার্টি অফিসে হাজির কলেজ ছাত্রী]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.