বাজি ফাটাতে গিয়ে মৃত অনির্বাণ ঘোষ।
বিক্রম রায়, কোচবিহার: দীপাবলির রাতে বাজি ফাটাতে গিয়ে এক যুবকের মৃত্যু হল। মৃতের নাম অনির্বাণ ঘোষ (৩৬)। পেশায় ব্যবসায়ী অনির্বাণবাবুর একটি ওষুধের দোকান রয়েছে কোচবিহার শহরে। দীপাবলির রাতে সেই দোকানের সামনে বাজি ফাটাতে গিয়ে মাথায় আঘাত পান তিনি। হেলিকপ্টার বাজিতে আগুন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা ফেটে যায়। তড়িঘড়ি তাঁকে শহরের এমজেএন হাসপাতালে নিয়ে যান সহকর্মীরা। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ফের দোকানে চলে আসেন অনির্বাণবাবু। এর ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ওই ব্যক্তি। বাড়ির লোকজন অনির্বাণবাবুকে শহরের এক নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহার শহরের সুনীতি রোড এলাকায়।
জানা গিয়েছে, বাড়িতে মা ও স্ত্রী ছাড়াও ওষুধের ব্যবসায়ী অনির্বাণ ঘোষের একটি বছর ছয়েকের শিশুকন্যা রয়েছে। এদিন সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ তিনি দোকানের শাটার নামিয়ে ফেলেন। এরপর সহকর্মীদের সঙ্গে দোকানের সামনের রাস্তায় বাজি ফাটাচ্ছিলেন তিনি। বেশ কয়েকটি আলোর বাজি জ্বালানোর পর হেলিকপ্টার বাজিতে আগুন দেন ওই যুবক। কিছু বুঝে ওঠার আগে সেটি ফেটে যায়। একেবারে মুখের সামনে ফাটায় সঙ্গে সঙ্গেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। সহকর্মীরা দেরি না করে তাঁকে কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসায় দেখা যায় মাথায় আঘাত পেয়েছেন অনির্বাণবাবু। আঘাত গুরুতর নয় দেখে বাড়ি ফেরার জন্য জোরাজুরি শুরু করে দেন ওই ব্যবসায়ী। এরপর সোজা দোকানে ফিরে আসেন। রাত দশটার কিছু পরে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দোকানের মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে গেলে কাছের এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা অনির্বাণবাবুকে পরীক্ষা করার পর জানিয়ে দেন, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মাথায় আঘাতজনিত কারণ ও হার্ট অ্যাটাকেই মৃত্যু হয়েছে। অচৈতন্য অবস্থার মধ্যেই তাঁর অ্যাটাকটি হয়।
দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ আরও স্পষ্ট হবে। মৃত অনির্বাণ ঘোষের বাড়ি কোচবিহার শহরের অদূরে গড়িয়াহাটির একনম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মদনমোহন কলোনিতে। সংসারে মা, স্ত্রী ও কন্যাসন্তান রয়েছে। দীপাবলির রাতের এই মর্মান্তিক ঘটনায় সংসারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যকে হারিয়ে বিহ্বল গোটা পরিবার। এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া। সহকর্মীরাও নির্বাক হয়ে গিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.