চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: পিকনিক যাওয়ার তাড়া। তাই সাত তাড়াতাড়ি জাতীয় পতাকা নামিয়ে পালালেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এমনই ঘটনা ঘটল আসানসোলের সালানপুরে। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে অভিভাবকরা। ক্ষোভের বশে স্কুলের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা।
রবিবার সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে অন্যান্য স্কুলের মতোই সালানপুর ব্লকের জিৎপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত প্রান্তপল্লী অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নামিয়ে দেওয়া হয় পতাকা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরূপ দত্তকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, লোহার পাইপ-সহ জাতীয় পতাকাটি চুরি হয়ে যেতে পারে। তাই বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে ততক্ষণাৎ নামিয়ে দেওয়া হয়েছে পতাকা। প্রধান শিক্ষকের চুরির ভয়ের এই অজুহাত মানতে নারাজ স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ পড়ুয়ারা জানিয়েছে, এদিন জাতীয় পতাকা নামিয়ে একটি গাড়িতে বড় লোহার কড়াই, রান্নার জিনিসপত্র চাপিয়ে দিদিমণিদের যেতে দেখেছে তারা। অভিযোগ, পিকনিকে যাওয়ার তাড়াহুড়োতেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন শিক্ষিকরা।
এদিনের ঘটনার পরই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। জানান, দীর্ঘদিন ধরেই মিড-ডে মিল নিয়ে সমস্যা রয়েছে স্কুলে। প্রধান শিক্ষক অনিয়মিত স্কুলে আসেন। এমনকী স্কুলে সরস্বতী পুজোও বন্ধ করে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক, অভিযোগ তাঁদের। এলাকাবাসীদের মধ্যে জিয়ারাম মিত্র, উজ্জ্বল দে, দীপেন সিং, বিকাশ রাউতরা বলেন, গ্রামবাসীদের ওপর দোষ চাপিয়ে নিজের দোষ ঢাকার চেষ্টা করছেন ওই শিক্ষক।
এই বিষয়ে সালানপুর ব্লকের স্কুল সার্কেল ইনস্পেক্টর প্রসেনজিৎ বারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে সালানপুর ব্লকের বিডিও তপন সরকার জানিয়েছেন, এই বিষয়ে তদন্ত করা হবে। কেন তিনি এই কাজ করলেন তার জানাতে হবে প্রধান শিক্ষককে। খবর পেয়ে এদিন ঘটনাস্থলে যান জিৎপুর উত্তরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তাপস চৌধুরি। তিনি এই শিক্ষকের আচরণের তীব্র নিন্দা করে বলেন, দেশের জাতীয় পতাকাকে যে শিক্ষক-শিক্ষিকারা অবমাননা করেন তাঁদের শিক্ষকতা করার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.