ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: ফের চেনা মেজাজে দেখা গেল বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনু্ব্রত মণ্ডলকে। লাভপুরের সভা থেকে বিজেপিকে একহাত নিলেন তৃণমূলের এই দাপুটে নেতা। স্পষ্ট করে বললেন, বিজেপির শেষ দেখে তবেই ছাড়বেন তিনি। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
রবিবার লাভপুরে পঞ্চায়েত সমিতির মাঠে বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয় তৃণমূলের তরফে। এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, সাংসদ অসিত মাল, অভিজিৎ সিংহ-সহ তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে অনুব্রত বলেন, “আমি লাভপুরে মিটিং করতে এসেছি, কিন্তু আমি এই মিটিং এর পক্ষে ছিলাম না। আমি অভিজিৎ সিংহ, তরুণ চক্রবর্তী-সহ দলীয় নেতৃত্বের কাছে জানতে চেয়েছিলাম এই সভার কী দরকার। ওঁরা বললো বিজেপির দিলীপ ঘোষ লাভপুরে একটা মিটিং করে গিয়েছে। কিন্তু ওরা পাগল ছাগলের দল, ওরা কী করলো তাতে আমার কিছু যায় আসে না। বিজেপি ভেবেছে আমি মরে গিয়েছি, কিন্তু আমি এত তাড়াতাড়ি মরবো না, তোমাদের মেরে তারপর মরবো।”
অসমের এনআরসি প্রসঙ্গেও বিজেপিকে তোপ দাগেন তিনি। বলেন, “অসমে এনআরসি করেছে বিজেপি সরকার। ক্ষমতা থাকলে পশ্চিমবঙ্গে করে দেখাক দেখি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গায়ে যত দিন এক ফোঁটা রক্ত থাকবে তুমি এনআরসি করতে পারবে না। ১৯৭১ সালের দলিল দেখাতে বলছ। কত জন গরীব মানুষের কাছে এই দলিল আছে?” তিনি অভিযোগ করেন, মান্নানবাবু লাভপুরে গিয়ে তরুণবাবুকে কে বেঁধে পেটাতে বলেছেন। সেইসঙ্গে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেন দলীয় কর্মীকে আক্রমণ করলে কেউ বসে থাকবে না। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা মারতে বলছেন তাদের গরু যেমন মারে সেই ভাবে মারুন। কোন রেয়াত করা হবে না। ওরা ভারতেই ইতিহাস ভুলে গিয়েছে। ভারত স্বাধীন করতে সব থেকে বেশি আন্দোলন হয়েছিল এই পশ্চিম বাংলা থেকে। তোমরা বড়বড় কথা বলছো, যেখানে সেখানে পথ অবরোধ করছো শুনবো না। সোমবার জেলা মিটিং ডেকেছি, এবার মিটিং করে আসার পর তোমার যেখানে অবরোধ করবে প্রশাসন যদি সরিয়ে দেয় ভালো কথা না হলে আমাদের কর্মীরা সুঁটিয়ে (স্থানীয় ভাষায় কঞ্চির মার) সরিয়ে দেবে। অর্থাৎ এদিনও চেনা রূপেই দেখা গেল অনুব্রত মণ্ডলকে। আর তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.