ফাইল ছবি
পলাশ পাত্র, তেহট্ট: ২০১৫ থেকে ২০১৯। গত পাঁচ বছরে রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক অবস্থানে আকাশ-পাতাল তফাৎ দেখা দিয়েছে। তূল্যমূল্য আলোচনায় না গেলেও প্রতিটা জেলার মতো বিজেপির সদস্য সংখ্যা নদিয়াতেও প্রায় দ্বিগুণ হতে চলেছে। শুধুমাত্র নদিয়া উত্তর বা কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির সদস্য সংখ্যা তিন লাখ পঁচিশ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। যা মাথাব্যথা বাড়িয়েছে তৃণমূলের। এর মাঝেই কৃষ্ণনগর শহরের বিজেপি অফিস থেকে চুরি হয় গেল সদস্য ফর্ম। পুলিশ জানিয়েছে, মিসিং ডায়েরি হয়েছে। তদন্ত চলছে।
সামনেই বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন। যার মাধ্যমে বুথ, মণ্ডল ও জেলার সভাপতি নির্বাচন হবে। গত ৬ জুলাই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন থেকে শুরু হয়েছিল ফর্মের মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহের কাজ। শেষ হয়েছে গত ২০ আগস্ট। ফর্ম ঝাড়াই-বাছাইয়ের পর সব জায়গাতেই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতা-নেত্রী বেছে নেওয়া হবে। আর দলের অন্দরের এই নির্বাচন ঘিরেই চাপা গুঞ্জন শুরু রয়েছে বিজেপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে। এর মাঝে কৃষ্ণনগর শহরের বিজেপি অফিস থেকে দু’হাজারের বেশি সদস্যের ফর্ম উধাও হওয়ার ঘটনায় রহস্য তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় বিজেপির শাসক গোষ্ঠীর নেতারা পুলিশের কাছে চুরির অভিযোগ জানালেও অপর গোষ্ঠীর নেতারা তা মানতে নারাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতার অভিযোগ, নিজেদের আসন ঠিক রাখতে সদস্যদের বই চুরির তত্ত্ব সামনে আনা হচ্ছে। আসলে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নেতা-নেত্রীরা বিরোধীদের সদস্য ফর্ম নিজেরাই গায়েব করে দিয়েছেন। এর ফলে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর সদস্যরা সাংগঠনিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। সহজেই তাঁরা জিতে যাবেন।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহ খানেক আগে অফিসের তালা খুলে পিছনের দিকে থাকা কম্পিউটার ঘর থেকে সদস্য ফর্ম চুরি করে দুষ্কৃতীরা। প্রশ্ন উঠেছে দলীয় অফিস থেকে কীভাবে সদস্য ফর্মের বই গায়েব হল? এর সঙ্গে কার স্বার্থ জড়িত রয়েছে। সমস্ত কিছু ঠিক থাকলে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে সাংগঠনিক নির্বাচন শুরু হবে। তার আগে ওই চুরি হয়ে যাওয়া ফর্মের বইয়ে থাকা সদস্যদের নাম ফের তুলতে হবে। এটা জেনেই কেউ এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
২০১৫ সালে বিজেপির শেষ সদস্য সংগ্রহ অভিযান হয়েছিল। মোবাইলে মিসড কল দিয়ে সেবার গোটা নদিয়ায় চার লাখ সদস্য হয়েছিল। যদিও পরে দেড়লাখের কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। তাই বর্তমানে শুধুমাত্র নদিয়া (উত্তরে) যা সদস্য হয়েছে তা আগের থেকে দ্বিগুণ। এই সংখ্যা আরও বাড়বে। জানান বিজেপির (উত্তর) জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার।
তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বর পর্যন্ত সদস্য সংগ্রহ হবে। বর্তমানে সদস্য ফর্মের দু’হাজার পাতা চুরি হয়েছে। ওই সদস্যদের নামগুলি কম্পিউটারে তোলা হয়ে থাকলে ফের ওই এলাকায় গিয়ে সদস্য করতে হবে না। কোনও অসুবিধা নেই। আর আমাদের সাংগঠনিক নির্বাচন সহমতের ভিত্তিতে হবে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.