সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রূপোলি জগতের পর একেবারে জনতার দরবারে। নায়ক থেকে জনপ্রতিনিধি। আসমান-জমিন ফারাক দুই ক্ষেত্র। তা সত্ত্বেও নিজের দক্ষতা আর জনপ্রিয়তায় অনায়াসেই তিনি ঘুচিয়ে দিয়েছিলেন এই ফারাক। পর্দায় যেমন দারুণ পারফর্মার হিসেবে নিজের ছাপ রেখেছেন, তেমনই রাজনীতিতে পা রেখেও স্বকীয়তার সঙ্গে কাজ করে গিয়েছেন তাপস পাল। আজ, তাঁর চলে যাওয়ার দিনে ফিরে দেখতেই হচ্ছে তাঁর সেই রাজনৈতিক কেরিয়ার। অভিনেতা এবং জনপ্রতিনিধি হিসেবে এমন সাফল্যের অধিকারীর সংখ্যা একেবারেই হাতে গোনা।
সালটা ২০০১। রাজ্যে বাম সরকারের একাধিপত্যের বিরুদ্ধে সবেমাত্র একটু একটু করে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। এমনই প্রতিষ্ঠান বিরোধী আবহের মাঝে তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তাপস পালের রাজনীতিতে পা রাখা। তারকা বাম প্রার্থী, আরেক অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে সে বছর আলিপুরের বিধায়ক হয়েছিলেন তাপস পাল। সেই থেকে কেরিয়ার শুরু। ৫ বছর ধরে ভাল কাজের পুরস্কার হিসেবে ২০০৬ সালে ফের বিধায়ক নির্বাচিত হন। ততদিনে বিরোধী রাজনীতিতে বেশ একটা নাম হয়ে গিয়েছে তাপস পালের।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে আরও ভরসা করতে শুরু করেছেন তাপস পালকে। আরও জনপ্রিয় হয়েছেন তিনি। তাই ২০০৯ সালে আরও বড় ময়দানে তাঁকে নামালেন মমতা। কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হলেন তাপস পাল। প্রথমবারেই একেবারে ছক্কা হাঁকিয়ে সংসদে চললেন ‘দাদার কীর্তি’র নায়ক। সিপিএম প্রার্থী, অ্যাথলেট জ্যোতির্ময়ী শিকদার তাঁর কাছে ধরাশায়ী হন। ২০১৪র লোকসভা ভোটেও খেললেন অপ্রতিরোধ্য ইনিংস। তবে দ্বিতীয়বারের সাংসদ জীবনে তাঁর সঙ্গী হয়ে গিয়েছিল গুটি কয়েক বিতর্ক।
এরপর অবশ্য তাঁকে বেশ খানিকটা ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা রোজভ্যালির সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে সিবিআইয়ের নজরে পড়েন। গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় দেড় বছর ভুবনেশ্বরে সিবিআই হেফাজতে ছিলেন। অসুস্থ হয়ে পড়েন সেই সময় থেকে। ২০১৮ সালের প্রথম দিকে ছাড়া পান। তারপর আর রাজনীতির সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ ছিল না তাপস পালের। শারীরিক অবস্থাও কাজ করার পক্ষে তেমন অনুকূল ছিল না। তবে যতটা সময় কাজ করেছেন, একেবারে চূড়ান্ত পারফর্মার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছেন। ঠিক যেমনটা ছিল তাঁর অভিনয়ের কেরিয়ার। তাঁর প্রয়াণের খবর পেয়েই টুইটারে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
Saddened & shocked to hear about the demise of Tapas Paul. He was a superstar of Bengali cinema who was a member of the Trinamool family.Tapas served the people as a two-term MP and MLA. We will miss him dearly. My condolences to his wife Nandini, daughter Sohini & his many fans
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) February 18, 2020
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.