রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: পরনে শুধুমাত্র একটি লুঙ্গি। রাতের অন্ধকারে রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছে এক যুবক। দেখে মানসিক ভারসাম্যহীন হিসাবেই ঠাওর হয়। দু’পায়ে তাঁর শিকল। এহেন অমানবিক দৃশ্য চোখে পড়ল বৃহস্পতিবার রাতে কাঁথিতে। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই রোগীর পায়ে নির্মমভাবে শিকল বেঁধে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে রাস্তায়। ওই অবস্থাতেই হেঁটে চলেছেন তিনি। পেটে ছিল চরম ক্ষুধা। বিভিন্ন খাবারের দোকানের সামনে গেলেও কেউ দু’মুঠো খেতেও দিচ্ছিল না। কেউ গরম জল ছুড়ে মারছে, কেউ জল ছুড়ে মারছে, কেউবা লাঠি নিয়ে তাড়া করছে। কিন্তু পায়ে অমানবিকভাবে শিকলবাঁধা অবস্থায় পথচলতি মানুষের চোখে পড়লেও কেউই মানবিকতার পরিচয় দেখায়নি।
[প্রতিবন্ধকতার তোয়াক্কা না করে দেহদানের অঙ্গীকার প্রৌঢ়ের]
বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াটসঅ্যাপে পায়ে শিকল বাঁধা ব্যক্তির ছবি ছড়াতেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। বিষয়টি নজরে আসে সমাজকর্মী তথা কাঁথি ৩ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কনিষ্ক পণ্ডা, পিকু গিরি ও অনির্বাণ চক্রবর্তীর। গভীর রাতে কাঁথি শহরের নিউমার্কেট থেকে উদ্ধার করেন পায়ে শিকলের বেড়ি পরানো মানসিক ভারসাম্যহীন ওই রোগীকে। কনিষ্কবাবুদের দেখে ওই রোগী তাঁর পেট দেখিয়ে ক্ষুধার যন্ত্রণার কথা বলতে থাকেন। তখনও তিনি ঠিকমতো হাটতে পারছিলেন না। কাঁথি শহরের নিউমার্কেট থেকে উদ্ধারের পর একটি দোকানে রুটি ও মাংস খাওয়ান সমাজকর্মীরা। এরপর কাঁথি থানার পুলিশকে খবর পাঠান কনিষ্কবাবুরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে রোগীকে থানায় নিয়ে আসে। কিন্তু পুলিশ পায়ের বেড়ি কাটতে এখনও পারেনি। পায়ে বেড়ি পরানো অবস্থায় ওই যুবক এখনও ঠায় বসে রয়েছেন কাঁথি থানায়।
[ডাইন অপবাদে প্রাণনাশের চেষ্টা, স্ত্রীর অত্যাচারে ঘরছাড়া স্বামী]
পুলিশ জানিয়েছে শিকল শক্তভাবে পরানো হয়েছে ওই যুবককে। পুরোপুরি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন নয় ওই যুবক। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, এই যুবকের বাড়ি কাঁথির নয়াপুট অঞ্চল এলাকার ভন্ডুবসান গ্রামে। তাঁর পরিবারের লোককে তলব করেছে পুলিশ। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি শহরে কয়েকদিন ধরে ঘুরছিলেন এই যুবক। বর্তমানে এই শিকল পরা যুবককে ঘিরে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহর এলাকায়। পরিবারের লোকজন থানায় এলে জট খুলতে পারে বলে ধারণা পুলিশের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.