Advertisement
Advertisement

বন্দি অসুস্থ, প্রিজন ভ্যানের সামনে গিয়ে বয়ান শুনলেন বিচারক

অভিনব দৃশ্য কাঁথি মহকুমা আদালত চত্বরে।

Contai judge takes statement of accused in prison van
Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:September 5, 2018 6:48 pm
  • Updated:September 5, 2018 6:48 pm  

রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: আপনি দোষী না নির্দোষ? নিজের পক্ষে কোন সাক্ষী দেবেন? প্রশ্নটা শুনে চমকে উঠল প্রিজন ভ্যানে শুয়ে থাকা অসুস্থ আসামি। কোনও রকম মাথা তুলে দেখল, ভ্যানের ভিতরে পাশে দাঁড়িয়ে আইনজীবী। আর ভ্যানের দরজা খুলে তার উত্তরের অপেক্ষা করছেন স্বয়ং বিচারক। আসামি অসুস্থ,  শুনে নিজেই এজলাস ছেড়ে বেরিয়ে চলে এসেছেন পুলিশ ভ্যানের কাছে। সেখানেই চলছে প্রশ্নোত্তর পর্ব। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় নজির স্থাপন করলেন কাঁথি মহকুমা আদালতের বিচারক অলি বিশ্বাস সরকার। বিচারকের এমন ভূমিকা দেখে অবাক গোটা আদালত চত্বর। এরকম ঘটনা কস্মিনকালেও ঘটেনি বলে দাবি করছেন আইনজীবীরাও। একই অবস্থা আসামিরও। বিচার প্রক্রিয়াকে চালু রাখার জন্য বিচারকের এই পদক্ষেপে হতভম্ব বাবা খুনে অভিযুক্ত আসামী তপন পাত্র।

গ্রেপ্তারির পর থেকে বাবাকে খুনের মামলায় দীর্ঘদিন ধরে জেল হেফাজতে রয়েছে রামনগর থানার সাবিত্রাপুর গ্রামের তপন পাত্র। বাবাকে শিলনোড়া দিয়ে খুন করেছিল সে। পরে স্থানীয়রা গণধোলাই দিলে কোমরে আঘাত পায় অভিযুক্ত। এর জেরেই পায়ে হাঁটার ক্ষমতা এক প্রকার হারিয়ে ফেলে। এদিন ছিল বাবাকে খুনের মামলার শুনানি। তপন পাত্রকে আদালতে হাজিরার জন্য প্রতিবন্ধীদের ব্যবহৃত হুইল চেয়ার নিয়ে এসেছিল পুলিশ। সেই চেয়ারে করেই এজলাসে যেত আসামি। কিন্তু আসামির শারীরিক পরিস্থিতির কথা শুনে এজলাস ছেড়ে বেরিয়ে এসে জবানবন্দি নিলেন। এর আগে মামলার সাক্ষীদের বয়ান নেওয়া হয়ে গিয়েছে। এদিন এজলাসে আসামি তপনের বক্তব্য শোনার দিন ছিল। তাই পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করেই আদালতের বাইরে প্রিজন ভ্যানের কাছেই চলে আসেন কাঁথির অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক (ফার্স্ট ট্রাক ফার্স্ট কোর্ট) অলি বিশ্বাস সরকার। প্রিজন ভ্যানের নীচে দাঁড়িয়েই তিনি আসামির বক্তব্য শোনেন তিনি। সেখানে তখন হাজির ছিলেন সরকারি ও আসামি পক্ষের আইনজীবী।

Advertisement

[মধ্যরাতে ছাত্রের বাড়িতে কড়া নাড়েন, ‘খেপা মাস্টার’-কে চেনেন?]

আইনজীবী অর্নিবাণ চক্রবর্তীর মাধ্যমে বিচারককে নিজের বক্তব্য জানায় তপন। রাগের বশে বাবাকে ভারী বস্তুর আঘাতে মারার কথা স্বীকারও করে নেয়। তবে সেই আঘাতে বাবা মারা গিয়েছিল কিনা তার জানা নেই। উল্লেখ্য, ২০১৩-র ২ আগস্ট মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে ফের তপন পাত্র। ফিরেই স্ত্রী ও ছেলেকে বেধড়ক মারধর করছিল। সেই সময় ছেলেকে বাধা দিতে আসেন বাবা পরমেশ্বর পাত্র। অভিযোগ, তাতেই রেগে গিয়ে বাবাকে ভারী শিলনোড়া দিয়ে মাথায় আঘাত করে তপন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পরমেশ্বরবাবুর। অভিযুক্তকে ধরে বেধড়ক মারধর করেন প্রতিবেশীরা। এই ঘটনায় তপনের কোমরের হাড় ভেঙে যায়। তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসার জন্য তপনকে কলকাতার আলিপুর জেলে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার আলিপুর জেল থেকেই তাঁকে কাঁথি আদালতে নিয়ে আসা হয়। সরকার পক্ষের আইনজীবী সন্দীপ মাইতি জানান, সব পক্ষের বক্তব্য শোনা হয়ে গিয়েছে। এবার পরের তারিখেই এই মামলায় রায়দান হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

[১৫ বছর ধরে ১ টাকা বেতন রেখে সমস্তটাই স্কুলে দান শিক্ষকের]

 

দেখুন ভিডিও-

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement