সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: বেসরকারি সংস্থার কর্মী দুর্গাপুর থেকে শেওড়াফুলি ফিরে জ্বর নিয়ে ভরতি হয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় তাঁর শরীরে COVID-19’এর জীবাণু মিলেছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কে থমথমে গোটা দুর্গাপুর। তবে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। হাসপাতাল স্যানিটাইজ করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। নেওয়া হচ্ছে সমস্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা।
দুর্গাপুরের এক বেসরকারি কারখানার উচ্চ পদে ছিলেন শেওড়াফুলির করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি। তিন মাস আগে অবসর নিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও তিনি সংস্থার অনুরোধে এক্সটেনশনে কাজ করছিলেন। এক্সটেনশনে থাকার সময় কলকাতা অফিসে কাজ করতেন। ওই বেসরকারি সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৩ মার্চ একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি দুর্গাপুরে আসেন। সেখান থেকে বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় এই সংস্থার ইউনিটে সেফটি বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাতে ফিরে আসেন দুর্গাপুরে। সগড়ভাঙ্গার একটি হোটেলে রাত্রিবাস করেন। পরের দিন সংস্থার দুর্গাপুর ইউনিট ঘুরে বিকেলে ফিরে যান শেওড়াফুলি।
এদিকে, লকডাউনের জেরে গত ২৪ মার্চ থেকে বন্ধ সংস্থার দুর্গাপুর ইউনিট। তাই এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে কারখানার শ্রমিক-সহ আশেপাশের বাসিন্দারা এই খবর পেয়ে চরম আতঙ্কিত।
দুর্গাপুর থেকে ফেরার প্রায় দিন ১২ পর জ্বর হয় আক্রান্ত ব্যক্তির। শনিবার তাঁকে ভরতি করা হয় কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে। সোয়াব পরীক্ষায় ধরা পড়ে তিনি করোনা পজিটিভ। রবিবার রাতে সংবাদমাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই সোমবার সকাল থেকে আতঙ্কে শুনশান হয়ে যায় দুর্গাপুর। ফাঁকা বাজার-হাট, এমনকী রাস্তাঘাটও। সোশ্যা মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় দুর্গাপুর থেকে ফেরা ওই ব্যক্তির করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর। আর তাতেই আতঙ্ক আরও দ্রুত ছড়ায়। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদার জানান, “রাজ্য থেকে এই ব্যাপারে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি। আসলেই গাইডলাইন মেনেই কাজ করা হবে।”
সেইমতো দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালকে আজ স্যানিটাইজ করা হয়েছে। তবে এই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির দুর্গাপুর-বাঁকুড়া সফরে আরও কতজন তাঁর সংস্পর্শে এসেছিলেন, তা চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। তাঁদেরও কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে বলে খবর।
ছবি: উদয়ন গুহরায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.