ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন বধূ। শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত জটিল হওয়ায় তাঁকে জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার দরকার ছিল। কিন্তু হাতে সময় খুব কম। তাই শেষ পর্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রোপচার ছাড়া ব্লক হাসপাতালেই ‘কনজয়েন্ট বেবি’ বা জোড়া শিশু প্রসব করালেন চিকিৎসকরা। যদিও জন্মের পর মাত্র কয়েক মিনিট বেঁচে ছিল ওই জোড়া কন্যাসন্তান। তবে সুস্থই রয়েছেন প্রসূতি। আপাতত চিকিৎসকেরা তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট ব্লক হাসপাতালের ঘটনা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার পলাশি গ্রামের বধূ সুচিত্রা ঘোষ প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে নতুনহাটের মঙ্গলকোট ব্লক হাসপাতালে আসেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী কিশোর ঘোষ। কিন্তু সুচিত্রাদেবীর শারীরিক অবস্থা ছিল সংকটজনক। এ বিষয়ে মঙ্গলকোট ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জুলফিকার আলি বলেন, “ওই বধূর দু’সপ্তাহ আগেই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়েছিল। হাসপাতালে আসার পর বোঝাই যাচ্ছিল তিনি যমজ সন্তান প্রসব করতে চলেছেন। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থা খুব জটিল হয়ে গিয়েছিল। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর মতন পরিস্থিতি ছিল না। তাই হাসপাতালে অস্ত্রোপচার ছাড়াই তঁাকে কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে প্রসব করানো হয়।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলকোট ব্লক হাসপাতালের চিকিৎসক শেখ সামিম রাজা ও নার্স কল্যাণী চৌধুরির প্রায় ২৫ মিনিটের প্রচেষ্টায় জোড়া সন্তানের জন্ম দেন সুচিত্রাদেবী। সদ্যোজাত দুই কন্যাসন্তানের মাথা আলাদা থাকলেও দু’জনের শরীর জোড়া অবস্থায় ছিল। ভূমিষ্ঠ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই মারা যায় তারা। কিশোর ঘোষ বলেন, “ব্লকস্তরের হাসপাতালে আমরা যা পরিষেবা পেয়েছি তা কোনওদিন আশা করতে পারিনি। আমরা চিকিৎসকদের কাছে কৃতজ্ঞ।”
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.