Advertisement
Advertisement

সিপিএমের সঙ্গে জোট! সাঁইবাড়ি দিবসের প্রাক্কালে সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ কংগ্রেস কর্মীদের

হাত ও কাস্তে-হাতুরির হাত ধরাধরি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও সমালোচনার মুখে কংগ্রেস।

Congress slammed in social media over alliance with CPM
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:March 16, 2019 7:58 pm
  • Updated:March 16, 2019 7:58 pm  

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: গত বিধানসভা নির্বাচনে চরম অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল। এবারের লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালেও তাই। হাত ও কাস্তে-হাতুরির হাত ধরাধরি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও সমালোচনার মুখে কংগ্রেস। দলের সাধারণ কর্মীরাও লিখছেন, সিপিএমের সঙ্গে হাত মেলালে আর সাঁইবাড়ি দিবস পালনের দরকার নেই কংগ্রেসের। আবার কেউ কটাক্ষ করে লিখছেন, সিপিএমের হাত যখন কংগ্রেস ধরেই ফেলেছে তখন সাঁইবাড়ি দিবসটাও পালন করুক সিপিএমকে সঙ্গে নিয়েই।

১৭ মার্চ। রবিবার বর্ধমান শহরের তেলমাড়ুই রোডে সাঁইবাড়ি লাগোয়া শহিদ বেদির সামনে পালিত হবে সাঁইবাড়ি দিবস। সাঁই পরিবারের তরফে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারা প্রতিবছরই হাজির থাকেন। ব্যক্তিগতভাবে অন্য দলেরও কেউ কেউ থাকেন। আবার কংগ্রেসের তরফে জেলা কার্যালয়ের সামনেও শহিদ দিবস পালন করা হয় এদিন। এবারও হবে। নির্বাচনের প্রাক্কালে জোটের ঘোঁট নিয়ে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হচ্ছে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বকে। ১৯৭০ সালের এই দিনে হামলা হয়েছিল সাঁইবাড়িতে। খুন হয়েছিলেন দুই ভাই প্রণব সাঁই ও মলয় সাইঁ। তাঁরা সকলেই কংগ্রেসের সক্রিয় নেতা-কর্মী ছিলেন। খুন হয়েছিলেন এই পরিবারের ঘনিষ্ঠ জীতেন রায়ও। অভিযোগ, সিপিএম মিছিল করে এসে এই গণহত্যা চালিয়েছিল। নাম জড়িয়েছিল প্রয়াত সিপিএম নেতা নিরুপম সেনেরও। প্রায় ৫ দশক পরেও সেই গণহত্যার বিচার পায়নি পরিবার। শাস্তি হয়নি খুনের জড়িতদের।

Advertisement

দেশজুড়ে শোরগোল ফেলেছিল সেই ঘটনা। তার পর থেকে প্রতিবারই নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রচারে কংগ্রেস নেতাদের মুখে সিপিএমকে সাঁইবাড়ি গণহত্যাকারী বলে অভিহিত করার রেওয়াজ চালু হয়। পরবর্তীকালে তৃণমূলেরও। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও সিপিএম জোট করেছিল। যা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ ছিল সাধারণ কংগ্রেস কর্মীদের। জেলা নেতৃত্বের বড় অংশেরও তাতে আপত্তি ছিল। এবারের লোকসভা নির্বাচনের কংগ্রেস-সিপিএম জোট বা আসন সমঝোতা নিয়েও তীব্র আপত্তি উঠেছে বর্ধমানের সাধারণ কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তীব্র সমালোচনা করছেন তাঁরা। শনিবার সাঁইবাড়ি দিবসের প্রাক্কালে যা আরও তীব্র হয়েছে। কেউ লিখেছেন, সাঁইবাড়ি গণহত্যা প্রতিবার ভোটের আগে সিপিএমের বিরুদ্ধে ইস্যু করেছেন নেতারা। আর এখন সেই গণহত্যাকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভোট চাওয়াটা লজ্জাকর। কেউ লিখেছেন, শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে কোন মুখে পালন করবে কংগ্রেস। কারও কটাক্ষ, সাঁইবাড়ি দিবস পালন সিপিএমকে সঙ্গে নিয়েই করুক কংগ্রেস।

পূর্ব বর্ধমান জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আজ দলের জেলা কার্যালয়ে শহিদ দিবস পালন করা হবে। তিনি নিজে ব্যক্তিগতভাবে সাঁইবাড়িতে শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন। প্রতিবছরই দেন। কিন্তু সিপিএমের সঙ্গে জোট গড়ে কীভাবে যাবেন সাঁইবাড়ির শহিদ স্মরণের অনুষ্ঠানে, সেই প্রশ্নে কাশীনাথবাবু বলেন, “আমরা সাধারণ নেতাকর্মীরা মনে প্রাণে এই জোটকে মানছি না। সিপিএমই সাঁইবাড়ি গণহত্যা ঘটিয়েছিল। আমি হাফ প্যান্ট পরা অবস্থায় তখন দেখেছি ঘটনাটা।” তাঁর দাবি, কংগ্রেসের সিংহভাগ নেতা-কর্মী এই জোট মানতে চাইছে না। গত বিধানসভায় জেলায় ১৬টির মধ্যে মাত্র ২টি সিট কংগ্রেসকে ছেড়ে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছিল সিপিএম। বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রটি জেলা কংগ্রেস চাইলেও পায়নি। এবারের লোকসভা নির্বাচনে জেলার দুই আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে সিপিএম। স্বাভাবিক ভাবেই জেলা কংগ্রেসের অনেকেই জানাচ্ছেন, লোকসভা নির্বাচনে চুপচাপ বসে থাকবেন তাঁরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement