সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ঝালদা পুরসভা হাতছাড়া তৃণমূলের (TMC)। কংগ্রেসের দখলে গেল পুরুলিয়ার (Purulia) এই পুরসভা। রাজ্যে এই একটি পুরসভাই রইল হাত শিবিরের দখলে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সোমবার তলবি সভায় অনাস্থা আনা কংগ্রেসের ৫ কাউন্সিলর ও নির্দলের এক কাউন্সিলর তথা তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া সোমনাথ কর্মকার ছাড়াও তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ করা নির্দল প্রতীকে জিতে আসা শীলা চট্টোপাধ্যায় হাজির ছিলেন। কিন্তু শাসকদল তৃণমূলের পাঁচ কাউন্সিলরের কেউই ছিলেন না। ফলে ১২ ওয়ার্ডের ঝালদা পুরসভায় দুই নির্দলের সমর্থনে ৭ টি ওয়ার্ড নিয়ে বোর্ড দখলে রাখল কংগ্রেস (Congress)।
গত ১৩ অক্টোবর ঝালদায় (Jhalda Municipality) তৃণমূল পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আসে । ওই অনাস্থার পর তলবি সভা ডাকা নিয়ে নানা টানাপোড়েন চলে। হাই কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের করেছিলেন পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল ও উপ-পুরপ্রধান সুদীপ কর্মকার। পালটা মামলা করেন অনাস্থা আনা কাউন্সিলর-সহ তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ করা শীলা চট্টোপাধ্যায়। সিঙ্গ বেঞ্চ ২১ নভেম্বর তলবি সভার নির্দেশ দিলেও উপ-পুরপ্রধানের ডাকা তলবি সভায় পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে, এই বিষয়টিকে সামনে রেখে পুরপ্রধান ডিভিশন বেঞ্চে যান। সেখানেও তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ২১ নভেম্বরই তলবি সভা হবে। সেইমতো এদিন ৭-০ সমীকরণে ঝালদা তৃণমূল পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল অপসারিত হলেন।
এই ফলাফল নিয়ে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা প্রাক্তন বিধায়ক নেপাল মাহাত বলেন, ”সমগ্র রাজ্যের মধ্যে কংগ্রেস একটিমাত্র এই পুরসভা কার্যত দখল করল কংগ্রেস। শাসকদল তৃণমূল তলবি সভার দিন ‘খেলা’ করতে চেয়েছিল। তৃণমূলের ৫ জন কাউন্সিলর, ঝালদার মহকুমাশাসক আর আইসি – এই ৭ জনকে নিয়ে খেলতে চেয়েছিল আমাদের ৭ জনের সঙ্গে। কিন্তু মাঠে কাউকেই দেখা গেল না। ঝালদার পুরপ্রধান হবে সাধারণ মানুষ।” এদিন পুরসভা দখল করার পর ঝালদার প্রয়াত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর ছবি নিয়ে মিছিল করেন কংগ্রেস কাউন্সিলর, নেতা, কর্মীরা।
গত পুর নির্বাচনের ফলাফলে ১২ ওয়ার্ডের ঝালদা পুরসভায় কংগ্রেস ও তৃণমূল পেয়েছিল পাঁচটি করে আসন। দুটি আসন পায় নির্দল। নির্বাচনের ফলাফলের দিন নির্দল প্রতীকে জেতা শীলা চট্টোপাধ্যায় শাসকদল তৃণমূলে যোগদান করেন। এরপরে খুন হয়ে যান এই পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। ফলে তৃণমূলের ছয় কাউন্সিলর ও তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া নির্দলের সোমনাথ কর্মকার শাসকদলকে সমর্থন করলে তৃণমূল পুরবোর্ড গঠন করে। কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের পর ওই ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে তাঁর ভাইপো কংগ্রেসের মিঠুন কান্দু জয়লাভ করেন।
তৃণমূলের পুরপ্রধান অপসারণ হওয়ায় কংগ্রেসের দখলে আসা বোর্ডের পুরপ্রধান কে হবেন, এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। এনিয়ে নানা জল্পনা চলছে। তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ করে আসা শীলা চট্টোপাধ্যায়, পুরসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের বিপ্লব কয়াল ও নিহত তপন কান্দুর স্ত্রী কংগ্রেসের পূর্ণিমা কান্দু ওই চেয়ারে বসতে পারেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.