অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: কংগ্রেসের প্রবাদপ্রতিম নেতা প্রয়াত প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিধায়ক চাচা জ্ঞান সিং সোহন পালকে ছাড়া এই প্রথম কংগ্রেস খড়গপুর সদর কেন্দ্রের নির্বাচনী ময়দানে নেমেছে৷ আর সেই দুর্বলতার কথা কার্যত স্বীকারও করে নিয়েছেন এই কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী চিত্তরঞ্জন মণ্ডল৷
সোমবার মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার আগে তিনি বলেন, “চাচার স্মৃতিতে ভোট হচ্ছে৷ চাচার সেই সুদিন ফিরিয়ে আনার জন্য বাম ও কংগ্রেস একজোট হয়ে নির্বাচনে নেমেছে৷ চাচাকে এখনও শহরের মানুষ ভালবাসেন৷ চাচার কথা ভুলতে পারেননি৷ তাই চাচার কথা আমরা বলব প্রচারের সময়ে।” সোমবার তিনি খড়গপুর মহকুমা শাসকের হাতে মনোনয়ন পত্র জমা করেছেন৷ উপনির্বাচনে এই কেন্দ্রে হাতে হাত ধরে লড়ছে বাম-কংগ্রেস। তাই মনোনয়ন পেশের সময় কংগ্রেস প্রার্থী চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বাম নেতারাও৷ উপস্থিত ছিলেন খড়গপুর পুরসভায় সিপিএমের কাউন্সিলর স্মৃতিকণা দেবনাথ, সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিপ্লব ভট্ট৷ এছাড়া ছিলেন কংগ্রেসের নেতা অমল দাস ও ইশাক খান৷
এদিন কংগ্রেস প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে বাম ও কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীরা গোটা শহরে একটা বাইক মিছিল করেন৷ নিজের মনোনয়ন জমা দিয়ে বেরনোর পরে তৃণমূল প্রার্থী তথা পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তথা শিক্ষক চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন৷ এদিকে মনোনয়ন জমা দিয়ে বেরনোর পরে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী চিত্তরঞ্জন মণ্ডল জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন৷ কংগ্রেস রাজ্যে সাইনবোর্ড এই কটাক্ষের জবাব দিয়ে প্রার্থী বলেন, “কংগ্রেস সাইনবোর্ড পার্টি হয়েছ না কি হয়েছে, সেটা জনগণ ঠিক করবে৷ আর সেটা স্পষ্ট হবে ভোটের ফল বেরনোর পরে।”
খড়গপুর সদর কেন্দ্রের লড়াই বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই কেন্দ্র থেকেই টানা ৮ বারের বিধায়ক হয়েছিলেন কংগ্রেসের জ্ঞান সিং সোহন পাল, যিনি চাচা নামেই সর্বাধিক জনপ্রিয় ছিলেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে সেই কেন্দ্রের দখল হাত শিবিরের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ওই কেন্দ্রের বিধায়ক হন তিনি। বর্তমানে তিনি মেদিনীপুরের সাংসদ হওয়ায়, শূন্য বিধায়ক পদের জন্য উপনির্বাচন হচ্ছে। গেরুয়া দাপট রুখে, শাসকদলের প্রতিপত্তি দমিয়ে কংগ্রেসের পক্ষে খড়গপুর সদর কেন্দ্র ফিরে পাওয়া কঠিন চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের এক বড় অংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.