Advertisement
Advertisement
Congress

দল ছেড়ে সোজা মমতার উপদেষ্টা, সাত্তারের ‘স্টিং অপারেশন’ টেরই পেল না কংগ্রেস

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাদ্রাসা শিক্ষা ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন ড. আবদুস সাত্তার। সূত্রের খবর, সাত্তারকে সম্প্রতি এই প্রস্তাব দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে এনিয়ে তাঁর চূড়ান্ত মত চাওয়া হয়। তিনি রাজি হন।

Congress blindsided as Sattar turned coat, gets key govt post
Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:November 7, 2024 8:49 am
  • Updated:November 7, 2024 10:35 am  

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দল ছেড়ে যাওয়া প্রাক্তন নেতা-কর্মীদের দুদিন আগে দলে ফেরার আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রদেশ সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। সেই আহ্বানের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই উপনির্বাচনের মুখে দলত‌্যাগ প্রাক্তন সহ-সভাপতি আবদুস সাত্তারের। বাম আমলের সংখ‌্যালঘু দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন সাত্তার। সেখান থেকে কংগ্রেসে যোগদান। সম্প্রতি প্রদেশ সভাপতি নির্বাচনী দৌড়ে যাঁর নাম একেবারে সামনের দিকে চলে গিয়েছিল, কার্যত এক ‘স্টিং অপারেশনে’ সেই সাত্তারের কংগ্রেস ত‌্যাগ টেরই পেল না প্রদেশ নেতৃত্ব। যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই দলে নানা মহলে চর্চাও চলছে। 

মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাদ্রাসা শিক্ষা ও সংখ‌্যালঘু উন্নয়ন বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন ড. আবদুস সাত্তার। সূত্রের খবর, সাত্তারকে সম্প্রতি এই প্রস্তাব দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে এনিয়ে তাঁর চূড়ান্ত মত চাওয়া হয়। তিনি রাজি হন। তার পরপরই সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে পদত‌্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। সেই ইস্তফাপত্র প্রদেশ কংগ্রেসে পাঠিয়ে প্রদেশ সভাপতি শুভঙ্কর সরকারকে সাত্তারের দলত‌্যাগের খবর জানানো হয়। তার পর সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলতে চেয়েছিলেন শুভঙ্কর। কিন্তু সাত্তার জানিয়ে দেন তিনি সরকারি উচ্চপদের প্রস্তাব পেয়েছেন, তা গ্রহণও করছেন। তার পরও তাঁর দলত‌্যাগ আটকাতে চেষ্টা করেন প্রদেশ সভাপতি। কিন্তু তার কিছুক্ষণের মধ্যে দুপুরেই সরকারি নির্দেশিকা তৈরি হয়ে যায়।

Advertisement

সূত্রের খবর, এই ঘটনা জানার পর ঘনিষ্ঠমহলে শুভঙ্কর বুঝিয়ে দেন, তিনি আর বিষয়টিকে কোনও গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ঘটনাটি তাঁর কাছে স্রেফ ‘অতীত’ হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে একটি সূত্রের বক্তব‌্য, আবদুস সাত্তার বাম আমলে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে তিনি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যুক্ত। তাঁকে তেমনই সম্মান দিয়েছে বর্তমান সরকার। ঘটনাটা অনেকটা একটা চাকরি ছেড়ে আর একটি চাকরি পাওয়ার মতো। কিন্তু দল বদলের পথে তিনি যাননি।

প্রসঙ্গত, সাত্তারের আদি বাড়ি মালদায়। ২০১৮ সালে সিপিএম ছেড়ে তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের হাত ধরে কংগ্রেসে যোগদান করেছিলেন। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বাদুড়িয়া থেকে প্রার্থী হন সাত্তার। তবে তাঁর এই কংগ্রেস ত‌্যাগকে হাত শিবিরের অনেকে আবার কটাক্ষ করেছেন ‘ন্যায়-নীতিহীন সুবিধাবাদি আত্মসমর্পণ’ বলে। সন্ধ‌্যায় প্রদেশ সভাপতি মেদিনীপুরের প্রচারে ব‌্যস্ত ছিলেন। কোনওভাবেই তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

তবে সাত্তারকে নিয়ে কার্যত অন্ধকারে হাতড়াতে শুরু করেছে সিপিএম আর বিজেপি। সিপিএম সাত্তারের উদ্দেশে সোশাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দিতে শুরু করেছে। আর প্রাক্তন বাম মন্ত্রীকে সরকারি পদে বসানো নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, “এটা তৃণমূল মার্ক্সসিস্ট কম্বো”। তাঁর অভিযোগ, আর জি কর আন্দোলনের নামে তৃণমূলকে বাড়তি অক্সিজেন দিয়েছে সিপিএমই। তারই পুরস্কার পেয়েছেন সাত্তার। এই ঘটনাকে ‘ফিশ ফ্রাই ডিপ্লোম্যাসি’-ও বলেছে তারা। যার জেরে তৃণমূলের তোপের মুখে বিজেপি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, “এর সঙ্গে ওই কথার সম্পর্ক কী? এটা তো প্রশাসনিক বিষয়। সরকার মনে করেছে তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। আবদুস সাত্তার আগে বাম দলে ছিলেন, সেখান থেকে কংগ্রেস যান। এখন তিনি সরকারি প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। এতে বিজেপির এত লাফালাফির কী আছে? ওদের দলে তো লোকই থাকতে চাইছে না।” শুভেন্দুর এক্স হ‌্যান্ডলে প্রতিক্রিয়া নিয়ে কুণালের কটাক্ষ, “কারও একটা এক্স হ্যান্ডেল আছে, যা ইচ্ছে লিখতে পারেন। মানসিক হতাশা এটা। প্রতিপক্ষ তৃণমূল শক্তিশালী হচ্ছে। অন‌্য দল থেকে তাদের দলে কর্মীরা আসছেন। বিজেপির সহ‌্য হচ্ছে না। তাই স্থান-কাল-পাত্র গুলিয়ে ফেলছেন।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement