স্টাফ রিপোর্টার: মিতব্যয়ী। অযথা খরচের বোঝা কমিয়ে রাজ্যের আর্থিক ভিত মজবুত করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। গত আর্থিক বছরের আয়ব্যয়ের হিসাব দেখে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এই প্রশংসাসূচক সার্টিফিকেট দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (Comptroller and Auditor General of India) বা ক্যাগ। শুধু তাই নয়, তারা জানিয়েছে, বাংলার কাজের এই পদ্ধতিকেই মডেল করে এগোতে হবে অন্যান্য রাজ্যকেও।
২০১৯-২০২০ আর্থিক বছরে রাজ্য সরকার যা আয় করেছে, তার থেকে ব্যয় কম। উপরন্তু খরচ নিয়ন্ত্রিত। যার জন্যই প্রশংসাসূচক কথাগুলি লিখে রাজ্যের অর্থ দপ্তরকে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছেন ক্যাগের অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল (প্রশাসন) রাহুল কুমার। দপ্তর সূত্রে খবর, তিনি জানিয়েছেন, ক্যাগের দপ্তরে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) এই সাম্প্রতিক উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, আয়ব্যয়ের হিসাব মিলিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। আয়ের অনেকটাই তারা গচ্ছিত রাখতে পেরেছে। এ সংক্রান্ত তথ্য তাদের ওয়েবসাইটেও তুলে দেওয়া হয়েছে।
যে প্রসঙ্গ বুধবার উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) প্রশাসনিক বৈঠকেও ওঠে। মুখ্যসচিব হিসাবে এই বৈঠকই ছিল রাজীব সিনহার (Rajiva Sinha) শেষ বৈঠক। তিনিই এ প্রসঙ্গ তুলে জানান, ক্যাগ পশ্চিমবঙ্গকে সার্টিফিকেট দিয়েছে। এই রাজ্য যেভাবে তাদের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর মধ্যে থেকে আয় ও ব্যয়ের সমতা রক্ষা করেছে তার প্রশংসা করেছে তারা। ৯৯.৬ শতাংশ রিকনসিলিয়েশন হয়েছে। অন্য রাজ্যকে বাংলার এই মডেলকে মেনে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে ক্যাগ। তাঁর কথায়, “লাগাতার পাঁচ-ছয় বছর ধরে আমরা এই পুরস্কার পাচ্ছি। আর দেখিয়ে দিয়েছি যে কীভাবে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করা যেতে পারে।”
ক্যাগ (Cag) সাধারণত রাজ্যের খরচের অডিট করতে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় খরচের নমুনা তুলে ধরে বিঁধে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে তেমন কোনও ঘটনা কার্যত নেই। যে প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও (Amit Mitra) জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকাল গোটা দেশের কাছে উদাহরণ তুলে ধরেছে। স্বচ্ছতা বজায় রেখে আর্থিক লেনদেন থেকে কর দেওয়া, এমনকী, তথ্য আদানপ্রদানের মতো সমস্ত সরকারি কাজ ডিজিটাইজড করেছি। তারই প্রশংসা করেছে ক্যাগ।
প্রসঙ্গত, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar) যেখানে রাজ্যের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে লাগাতার তোপ দেগে চলেছেন, সেখানে ক্যাগের এমন প্রশংসাসূচক সার্টিফিকেট যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এর মধ্যে তৃণমূল রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মতো একটি বিষয় নিয়ে। গত কয়েক বছরে এই সম্মেলন থেকে কী কী শিল্পের প্রস্তাব এসেছে, সম্মেলন আয়োজনের খরচই বা কত-এসব নিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন তুলে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল। জবাব পেতে দেরি দেখে দুর্নীতির অভিযোগ পর্যন্ত তুলে বলেছেন, নিশ্চয়ই এখানে লুকনোর মতো কিছু আছে। তার জবাবেই গত ২৪ সেপ্টেম্বর দীর্ঘ চার পাতার চিঠি দিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তৃণমূলের খোঁচা, “রাজ্যপাল সব কিছু ফাঁস করতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু এটা ফাঁস করেননি। হয়তো বা এর কোনও উত্তর ওঁর কাছে নেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.