Advertisement
Advertisement

মুসলিম বধূর হাতেই দেবীর আরাধনা, সম্প্রীতির কালীপুজো হবিবপুরে

মা সবার, নীরবে বার্তা শেফালি বিবির।

Communal harmony: Malda Muslim family worships Kali for decades
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 16, 2017 2:53 pm
  • Updated:October 16, 2017 3:25 pm  

বাবুল হক, মালদহ: এই কালীপুজো কার? গোটা হবিবপুর বলে শেফালি বিবির। তাঁরই উদ্যোগে ফি বছর কালীপুজো হয়ে আসছে মালদহের হবিবপুরের মধ্যম কেন্দুয়ায়। ছাপোষা বধূর সাফ কথা, ‘‘মা কারও একার নয়। মা সবার। এই মায়ের জন্যই বেঁচে আছি।” তিনি বয়সের ভারে খুব একটা ছোটাছুটি করতে পারেন না। তবু ক্লান্তি নেই। হৃদয়ের ডাকে মাতৃ আরাধনার প্রস্তুতি নেন।

[মুসলিম বৃদ্ধের প্রতিষ্ঠিত কালীমাতার পুজো আজও হটনগরে]

Advertisement

MLD-HARMONY-KALI

ষাটোর্ধ্ব শেফালি এবারও যথারীতি বাড়ি বাড়ি চাঁদা তুলে মায়ের পুজোর আয়োজন করছেন। টানা ৩৫ বছর ধরে কালীপুজো করেন মুসলিম সম্প্রদায়ের এই মহিলা। তাঁর পুজো এখন সর্বজনীন রূপ পেয়েছে। শেফালি বিবির দেবীর মাতৃ আরাধনায় মেতে ওঠেন হবিবপুরের মধ্যমকেন্দুয়ার বাসিন্দারা। পুজো উপলক্ষ্যে শেফালি বিবির বাড়ি ও কালীমন্দির ঘিরে মেলা বসে। হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের ভিড়ে শেফালি বিবির এই কালীপুজো হয়ে ওঠে সত্যিকারের মিলনমেলা। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, শেফালি বিবির কালী ভীষণ জাগ্রত। ভক্তরা দূর-দূরান্ত থেকে এই গ্রামে আসেন। অনেক দর্শনার্থী দেবীর জন্য সোনা-চাঁদির অলঙ্কার দান করেন। সেই অর্থ মায়ের নামে সঞ্চিত হয়। অনেকেই মানত করেন। ভক্তদের দাবি তাদের ইচ্ছেপূরণ করেন এই কালী মা।

[অচল কয়েনও ‘সচল’, তাহেরপুরে শ্যামার আরাধনায় এটাই বার্তা]

এক মুসলিম বধূর ইচ্ছেয় এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় এমন কালীপুজোর আয়োজন সম্প্রীতির এক বেনজির দৃষ্টান্ত। জেলায় সম্প্রীতির কালীপুজো বলেও পরিচিত এটি। হবিবপুর থানার বুলবুলচণ্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতে এই মধ্যম কেন্দুয়া গ্রাম। রেলব্রিজ লাগোয়া এলাকায় শেফালিদেবীর বাড়ি। তাঁর বাড়ির পাশেই কালীমন্দির। শেফালি বিবির পুজোর জন্য পরবর্তীতে গ্রামবাসীরা মন্দির তৈরি করে দেন। শেফালিদেবীর স্বামী আফসার শেখ কয়েক বছর আগে অসুস্থ হয়ে মারা যান। ভদ্রমহিলার দুই ছেলে পিন্টু ও সেন্টু শেখ ভিনরাজ্যে গিয়ে শ্রমিকের কাজ করেন। বয়স হয়েছে। তবু নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মায়ের পুজো করেন। কী বলেন শেফালিদেবী? তাঁর কথায়, ‘‘৩৫ বছর আগে আমার কঠিন অসুখ হয়েছিল। রোগ সারছিল না। ভেবেছিলাম, এবার অসুখেই মারা যাব। একদিন কালীমায়ের স্বপ্নাদেশ পাই। আমাকে পুজো করতে বলা হয়েছিল। পুজোর নিয়ম জানতাম না। পড়শিদের কাছ থেকে পুজোর আয়োজন করার জন্য সাহায্য চেয়েছিলাম। তখন থেকেই পুজো করে চলেছি আমরা।” এবারও প্রতিমা তৈরি থেকে প্রস্তুতির যাবতীয় কাজ শেফালিদেবীকে সামনে রেখেই স্থানীয়রা করছেন। বসতে চলেছে মেলাও। শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয় এলাকার একটি পুকুরে। মধ্যমকেন্দুয়ায় কোনও দুর্গাপুজো হয় না। ফলে এই কালীপুজোই তাদের কাছে আনন্দের সব উপকরণ বয়ে আনে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement