অরূপ বসাক, মালবাজার: চাকরি দেওয়ার নামে লক্ষাধিক টাকা কাটমানি নিয়েছিল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান৷ কিন্তু মেলেনি প্রতিশ্রুতি মতো চাকরি৷ টাকা ফেরত চাইলে, তাও মেলেনি বলে অভিযোগ। আর সেই মানসিক অবসাদ থেকেই আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক কলেজ ছাত্রী৷ এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়াল মালবাজার মহকুমার গজলডোবার ১২ নাম্বার কলোনিতে। কলেজ ছাত্রীর নাম লিপিকা পণ্ডিত, বয়স ২২৷ অভিযুক্ত উপপ্রধানের নাম সুশীল সরকার। সূত্রের খবর, বর্তমানে মাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই কলেজ ছাত্রী।
[ আরও পড়ুন: মিড-ডে মিলে পোকা! তেহট্টে ঘটনার প্রতিবাদে খাবার বয়কট অধিকাংশ পড়ুয়ার]
ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, গত দেড় বছর আগে তৃণমূলের উপপ্রধান সুশীল সরকার এই ছাত্রীকে মালবাজার হাসপাতালে ওয়ার্ড গার্লের চাকরি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল৷ এবং এর জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা কাটমানিও নিয়েছিল সে৷ এখনও সেই চাকরি পাননি লিপিকা পণ্ডিত৷ তারপর অভিযুক্ত পুরপ্রধানের কাছে টাকা ফেরত চান তিনি৷ কিন্তু সেটা ফেরত না পেয়ে, শুক্রবার চরম মানসিক অবসাদে একসঙ্গে ২০টি ঘুমের ওষুধ খেয়ে নেন তিনি৷
তাঁর পরিবার সূত্রে খবর, বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়ে সুশীল সরকারকে টাকা দিয়েছিল পরিবারটি৷ কিন্তু চাকরি না পাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা৷ রোজ বাড়িতে ভিড় জমতে থাকে পাওনাদারদের৷ অপমান সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন লিপিকা৷ তাঁর মা রাধা পণ্ডিত বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে বাড়ির গরু,ছাগল বিক্রি করে কিছুটা ঋণের টাকা শোধ করেছি৷ কিন্তু এখনও অনেকেটাই বাকি। সুশীল সরকার আমাদের পরিবারকে ছারখার করে দিল। আমরা তৃণমূল উপপ্রধানের শাস্তি চাই।’’
[ আরও পড়ুন: জেলে ছক কষে খুন, অভিযোগে সিভিক ভলান্টিয়ারের উপর হামলা নিহত বন্দির পরিবারের ]
এ বিষয়ে জানতে সুশীল সরকারকে ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি৷ তবে তৃণমূলের মাল ব্লক সভাপতি তমাল ঘোষ বলেন, ‘‘মেয়েটি আমার বোনের মতো। আজ সকালেও ওর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। মেয়েটির কাজের খুব দরকার ছিল। আমি সব জায়গায় বলে রেখেছি, যাতে ওকে কোন কাজে ঢোকানো যায়। তবে উপপ্রধান মেয়েটির আত্মীয়র মতো। হয়ত অন্য কোনও কারণেও মেয়েটি সুশীল সরকারের কাছে টাকা রাখতে পারে।’’ এলাকার বিজেপি নেতা অখিল সরকার জানান, এই সুশীল সরকারের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.