ছবি: প্রতীকী
শেখর চন্দ্র, আসানসোল: গরু ও কয়লা কাণ্ডে দিল্লিতে ইডির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বিকাশ মিশ্রকে শুক্রবার সকালে তোলা হয় আসানসোল সিবিআই আদালতে। তবে এদিন বিকাশের জামিন ও সিবিআইয়ের রিমান্ডে পাওয়া নিয়ে শুনানিকে কেন্দ্র করে সিবিআই আদালতে বিস্তর নাটক হয়। প্রথম দফার সওয়াল-জবাবের শেষে সিবিআই আদালতের বিচারক জয়শ্রী বন্দোপাধ্যায় তার জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের সিবিআই রিমান্ডের নির্দেশ দেন। পরে আবার দ্বিতীয় দফায় সওয়াল-জবাবের পরে বিচারক প্রথম নির্দেশ সংশোধন করে ৭ দিনের সিবিআই রিমান্ডের নির্দেশ দেন। আগামী ২২ এপ্রিল বিকাশ মিশ্রকে আবার আসানসোলের সিবিআই আদালতে তোলা হবে।
এদিন সকালে বিকাশ মিশ্রকে সিবিআই আদালতে তোলা হয়, তখন সওয়াল করার মতো কোন আইনজীবী এজলাসে ছিলেন। বিচারক সিবিআইয়ের আবেদন মতো তার জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কিন্তু এরপরেই নাটক শুরু হয়। বিকাশের হয়ে এজলাসে সওয়াল করতে আসেন শেখর কুণ্ডু, সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায় ও সোমনাথ চট্টরাজ। তারা বলেন, এইভাবে কোনও নির্দেশ দেওয়া যায় না। প্রয়োজন হলে, সরকারি আইনজীবী বা পিপি দেওয়া হয়। এছাড়াও এদিন দিল্লিতে ইডির করা মামলায় আদালত মক্কেলের শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে তার জামিন মঞ্জুর করেছে। এখানেও তা করা হোক। তখন বিকাশের মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখে বিচারক সিবিআইয়ের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, তারা তো রিমান্ডে চাইছেন। কিন্তু আপনাদের হেফাজতে এর চিকিৎসার ব্যবস্থা হবে তো? সিবিআই সহমত হলে, বিচারক আগের নির্দেশ সংশোধন করে সাতদিনের সিবিআই রিমান্ডের নির্দেশ দেন।
জানা গিয়েছে, দিল্লি পুলিশের অফিসার রণধীর সিংয়ের নেতৃত্বে ৬ সদস্যর একটি দল বৃহস্পতিবার বিহারের তিহার জেল থেকে তাকে দূরন্ত এক্সপ্রেসে ধানবাদে নিয়ে আসে। সেখান থেকে এদিন সকালে সড়ক পথে বিকাশকে আনা হয় আসানসোল সিবিআই আদালতে। সিবিআই গরু ও কয়লা পাচারের মামলায় বিকাশকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চেয়ে দিল্লিতে প্রডাকশন ওয়ারেন্ট পাঠিয়েছিল। তিহার জেল সেই আবেদন মঞ্জুর করে। তারপরেই সিবিআই (CBI) আদালতে নিয়ে আসা হয় কয়লা বিকাশ মিশ্রকে।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ মার্চ টানা জেরার পরেও বিভিন্ন প্রশ্নের সদুত্তর না দেওয়ায় দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে ফেরার থাকা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য নেতা বিনয় মিশ্রের (Binay Mishra) ভাই হল এই বিকাশ মিশ্র। দিল্লিতে গ্রেপ্তার করার পরে তাকে ৬ দিনের রিমান্ডে নিয়েছিল ইডি। সেই রিমান্ড শেষে গত ২২ মার্চ থেকে তিহার জেলেই রয়েছে কয়লা ও গরু পাচারের মামলার অন্যতম অভিযুক্ত। সিবিআই সূত্রে খবর, বিনয়ের হয়ে যাবতীয় ব্যবসা সামলাতেন তার ভাই বিকাশ মিশ্র। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই কোথায় কোথায় টাকা যেত, আর কারা কারা এর সঙ্গে যুক্ত তা জানতে চান তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, গ্রেপ্তারির আশঙ্কায় একমাস আগেই দিল্লিতেই গা ঢাকা দিয়েছিল বিকাশ। সিবিআই ও ইডির বারবার তলব সত্ত্বেও গরহাজির ছিল সে। যদিও এখনও পর্যন্ত বেপাত্তা রয়েছেন বিনয়। তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই রেড কর্ণার নোটিস জারি করেছে সিবিআই।
ইডির তদন্তকারীদের অনুমান, দাদার মতো বিকাশও বিদেশে পালাতে পারেন এই আশঙ্কায় বিকাশ মিশ্রর নামে লুক আউট নোটিসও জারি করেছিল সিবিআই। শেষপর্যন্ত দিল্লি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ইডি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.