ফাইল ছবি
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: অপরাধ দমনে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এখন তদন্তকারী সংস্থাগুলির অন্যতম হাতিয়ারের কাজ করে। সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, জনবহুল এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানোও হয়। কিন্তু বিধি বাম! কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা হত্যাকাণ্ডের তদন্তে পর্যাপ্ত ও ভাল গুণমানের ফুটেজের অভাবে থমকে যাচ্ছে তদন্তের গতি। দুষ্কৃতীদের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও তাদের চিহ্নিতকরণে সমস্যায় পড়ছে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে গঠিত স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট)। পূর্ব বর্ধমান জেলা ছাড়াও পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকেও ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ভাল কোনও ‘লিড’ সিসি ক্যামেরার ফুটেজে মেলেনি।
গত ১ এপ্রিল পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে দুষ্কৃতীরা গুলিতে ঝাঁজরা করে দেয় রাজু ঝাকে। নীল গাড়িতে চেপে এসে কাজ সেরে আবার ওই গাড়িতেই চম্পট দেয় শার্প শুটাররা। ঘটনাস্থলে একটি নীল রঙের বাইকেরও অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। তাতে শার্প শুটারদের সঙ্গে থাকা একজনকে চেপে পালাতে দেখা গিয়েছে। পরে ওই নীল চারচাকা গাড়িটি শক্তিগড় থানার অদূরে উদ্ধার করা হয়। এই নীল গাড়িটিকে ঘটনার ভোরে পশ্চিম বর্ধমানের ডুবুরডিহি চেক পোস্ট দিয়ে ঝাড়খণ্ড-বিহারের দিকে যেতে ও ওইদিন দুপুরে আবার ফিরে আসতে দেখা গিয়েছে। এই নীল গাড়িটি দিল্লি থেকে চুরি করা হয়েছিল বলে সিট জানতে পারে।
সেই সূত্রে সিটের তরফে পূর্ব বর্ধমান থেকে দিল্লি পর্যন্ত জাতীয় সড়কে আততায়ীদের সম্ভাব্য রুটের বিভিন্ন জায়গার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করা হয়। তা করতে গিয়ে বারবার হোঁচট খেতে হয়েছে তদন্তকারীদের। বহু গুরুত্বপূর্ণ জায়গার ফুটেজ পাননি তদন্তকারীরা। সেই সব এলাকায় সরকারি উদ্যোগে ক্যামেরা বসানো হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা কাজই করে না। ফলে ফুটেজ মেলেনি। এই হত্যাকাণ্ডের কিনারায় দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার এলাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে রাজু ঝার হোটেল রয়েছে। ঘটনার দিন সেখান থেকেই গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত আবদুল লতিফের সঙ্গে তারই গাড়িতে করে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন রাজু। তাই ওই এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই তদন্তে। আবার আসানসোলের ডুবুরডিহি, ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, বিহারের জামুই, উত্তরপ্রদেশের বরেলি, দিল্লির জনকপুরী এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ সিটের কাছে।
আবার ঘটনাস্থল শক্তিগড় ও সংলগ্ন এলাকার ফুটেজও তদন্তের দিকনির্দেশের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেই ফুটেজও পর্যাপ্ত মিলছে না। আবার মিললেও তা অনেক ক্ষেত্রেই অস্পষ্ট পর্যাপ্ত আলোর অভাবে। ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে বিভিন্ন পয়েন্টে সরকারি উদ্যোগেই নজরদারিতে উন্নত মানের ক্যামেরা বসানো রয়েছে। কিন্তু সেখান থেকেও ভাল ফুটেজ মিলছে না। বড় দোকানেও সিসি ক্যামেরা বসানো থাকে নিজেদের নিরাপত্তার কারণে। সেখানকার ফুটেজও বেশিরভাগই নাকি অস্পষ্ট। এক আধিকারিক জানান, প্রথমত জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলার ফলে অনেক জায়গায় খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে। যার ফলে কিছুটা সমস্যা হয়েছে ক্যামেরা ও আলোকস্তম্ভের তার কেটে যাওয়া-সহ বিভিন্ন কারণে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.