অর্ণব দাস, বারাসত: আচমকাই বিকট আওয়াজ সঙ্গে মারাত্মক ঝাঁকুনি। কয়েক মিনিটের মধ্যে মনে হয়েছিল ভূমিকম্পে ওলট পালট হয়ে যাচ্ছে দুনিয়া। ঝাঁকুনির চোটে কামরার সমস্ত কিছু এদিক-ওদিকে ছিটকে যায়। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের বি-৪ কামরার গেটে দাঁড়িয়ে থাকা এক যাত্রী ছিটকে পড়ছিলেন ট্রেনের বাইরে। কোচের অ্যাটেনডেন্ট প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রক্ষা করেন তাঁকে। বরাতজোরে বাড়ি ফিরে সেই কাহিনী শোনালেন মধ্যমগ্রাম পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বঙ্কিমপল্লির বাসিন্দা প্রবীর দাস। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কোচের অ্যাটেনডেন্ট ছিলেন তিনি।
একমাস আগে একটি ঠিকাদার সংস্থার হয়ে দূরপাল্লার ট্রেনের এসি অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন প্রবীর। এর আগে আহমেদাবাদ, গুয়াহাটি, পাটনা গিয়েছেন। শুক্রবার যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের বি-৪ এবং বি-৫ এই দু’টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগির অ্যাটেনডেন্টের দায়িত্ব ছিল তাঁর উপরে। এই দুটোই বগি অবশ্য দুর্ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে।
দুর্ঘটনার সময় প্রবীর দাস ছিলেন বি-৪ বগিতে গেটের সামনে। আচমকাই বিকট শব্দ আর ঝাঁকুনিতে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একজন যাত্রীর প্রায় পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। মুহূর্তের মধ্যে তাঁকে ধরে কামরার ভিতরের দিকে টেনে ধরেন প্রবীর। সেই সময় ঝাঁকুনিতে পড়ে গিয়ে কোমরে চোট লাগে। তবুও যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরেই ট্রেন থেকে নেমেছিলেন প্রবীর।
শনিবার সন্ধেয় পুলিশের উদ্যোগ মধ্যমগ্রামের বাড়িতে ফিরে প্রবীর বলেন, “এমন অভিজ্ঞতা জীবনে হয়নি। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি। রাত তিনটেয় খরগপুরে নিয়ে আসা হয় আমাদের। এদিন হাওড়ায় ফিরেছি। এখনও স্বজনহারাদের কান্না কানে বাজছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.