Advertisement
Advertisement
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক

জল সমস্যার এখনও সমাধান নেই কেন? খরাপ্রবণ পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী

জনস্বাস্থ্য কারিগরি আধিকারিকদের সঙ্গে ধমক খেলেন দলের ৩ বিধায়কও।

CM Mamata Bannerjee strictly orders to solve water crisis in Purulia
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:December 29, 2019 7:49 pm
  • Updated:December 30, 2019 8:35 am  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বারবার গুরুত্ব দিয়ে বলা সত্ত্বেও পুরুলিয়ার মতো রুক্ষ জেলায় পানীয় জল সমস্যার স্থায়ী সমাধান নেই। এক বছর পর পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক করতে গিয়ে এই নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বেলগুমা পুলিশ লাইনের কনফারেন্স হলে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পড়েন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের কয়েকজন আধিকারিক। তিনি কড়া নির্দেশ দিয়ে গেলেন, জল সমস্যার সমাধান করতেই হবে। প্রশাসনিক কাজের গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে গিয়ে ধমক খেলেন কাশীপুরের বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া। সোমবার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরোধিতায় পুরুলিয়া শহরে পদযাত্রা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। 

লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর  প্রথম এই পুরুলিয়া সফরে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্ধারিত সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটা থাকলেও, রাঁচিতে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের শপথ অনুষ্ঠান সেরে তিনি দ্রুতই পৌঁছে যান পুরুলিয়ায়। বিকেল চারটে নাগাদ বেলগুমা পুলিশ লাইনের কনফারেন্স হলে বৈঠক শুরু করেন। প্রায় আধঘণ্টা পর সেখানে পৌঁছন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা এবং অন্যান্য দপ্তরের সচিবরা। জেলার উন্নয়নে প্রশাসনিক কাজকর্ম দেখে সন্তুষ্ট হলেও, জল সমস্যার সমাধান অধরা দেখে রীতিমত ক্ষুব্ধ হন তিনি। এর দায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের উপর চাপিয়ে সচিব মনোজ পন্থকে তিনি নির্দেশ দেন, যে আধিকারিকরা এখানে ৪,৫ বছর ধরে কাজ করছেন, তাঁদের যেন সরিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: আরও বেশি বিদ্যুতের জোগান এবার গঙ্গাসাগরে, ঘোষণা বিদ্যুৎমন্ত্রীর]

রাজ্যের খরাপ্রবণ এলাকাগুলিতে পানীয় জলের সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্বব্যাংকের উদ্যোগে যৌথভাবে কাজ করছে জাপানি সংস্থা জাইকা। পুরুলিয়াতেও তার কাজ চলছে। কিন্তু জাইকার কাজ ঠিকমতো এগোচ্ছে না। এই অভিযোগ পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরকেই গোটা কাজ দেখভালের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি, পঞ্চায়েত এলাকায় টিউবওয়েল মেরামতির কাজও করতে হবে এই দপ্তরকে। পানীয় জল সরবরাহ স্বাভাবিক করতে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দপ্তরের জন্য বরাদ্দ টাকাও ব্যয় করতে হবে বলে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর।

PRL-CM

বৈঠকে জেলার বিধায়কদের কাজের খতিয়ান নেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে কাশীপুরের বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া তাঁকে প্রশাসনিক কাজের গতি নিয়ে অভিযোগ জানাতে গিয়ে নিজেই ধমক খান। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে পালটা প্রশ্ন করেন, ”প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করছে। তুমি কী তোমার কাজ ঠিকমতো করছো?” এরপর তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, জেলাশাসকের নির্দেশমতো কাজ করেই অনেকটা এগিয়েছে পুরুলিয়া। সেভাবেই সমস্ত কাজ হবে। এ নিয়ে প্রশ্নের কোনও অবকাশ নেই। এছাড়া পারার বিধায়ক উমাপদ বাউরি এবং বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সরেনকেও নিজেদের দায়িত্ব, জনসংযোগ সম্পর্কে সতর্ক করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

[আরও পড়ুন: ২২০ বছরের পুরনো মন্দিরে দুঃসাহসিক চুরি, খোয়া গেল দশ লক্ষ টাকার গয়না]

তবে সামগ্রিকভাবে জেলা প্রশাসনের কাজে বেশ সন্তোষপ্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সাল থেকে ২০১৯ – এই সময়ের মধ্যে জেলার উন্নয়নের খতিয়ান নিয়ে এদিন প্রকাশিত হয়েছে পকেট ডায়েরি, যার নাম ‘নিউ লাইটস,নিউ হাইটস।’ কাজের ছবি ও তথ্য নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘আরোহণ’ নামে একটি পুস্তিকাও। সেসব দেখে খুশি মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার বেলা ১১টায় পুরুলিয়া শহরে আমজনতাকে সঙ্গে নিয়ে CAA ও NRC বিরোধী মিছিলে হাঁটবেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে একটি জনসভায় বক্তব্য রাখার কথা তাঁর।

ছবি: সুনীতা সিং।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement