সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুয়ারে সরকারের নতুন প্রকল্প ‘দুয়ারে ত্রাণ’। অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এ (Cyclone Yaas) বিধ্বস্ত রাজ্যের উপকূলীয় এলাকা। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ৩ জুন থেকে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ (Duare Tran) প্রকল্পের আর্থিক সাহায্যে পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ‘যশে’ কার্যত ধূলিসাৎ। কাঁচাবাড়ি, দোকানঘর ভেঙে গিয়েছে। কোথাও কোথাও জলমগ্ন গ্রাম। ফের নতুন করে আশ্রয় গড়তে হবে। তার জন্য প্রয়োজন আর্থিক সাহায্য। সরকারের তরফে সেই সাহায্য পেতে দিঘা, কাঁথির মতো দুর্গত এলাকার মানুষজন ইতিমধ্যে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ পেতে আবেদন জানানো শুরু করেছেন। পৌরসভাগুলিতে এই আবেদন নেওয়া হচ্ছে। প্রথমদিন এই কাজ ঠিকমতো চলছে কি না, জানতে সকাল থেকে হাজির মহকুমাশাসকরা।
জনপরিষেবায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের সাফল্য অপরিসীম। বহুদিনের বকেয়া থাকা বিভিন্ন কাজ এক শিবিরেই হয়ে গিয়েছিল। জনগণের মধ্যেও ভরসা ফিরেছিল। তা থেকেই সরকারের সিদ্ধান্ত, এবার থেকে এ ধরনের নাগরিক পরিষেবা হাতের নাগালে অর্থাৎ ‘দুয়ারে’ই মিলবে। আর এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তাই তা যত দ্রুত হাতের নাগালে পৌঁছে দেওয়া যাবে, ততই ভাল। আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর দ্রুততার সঙ্গে এই কাজের গুরুত্ব সবচেয়ে ভাল বোঝেন। তাই ‘যশ’ পরবর্তী সময়ে তিনিই ঘোষণা করেছিলেন ‘দুয়ারে ত্রাণ’-এর মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা। কীভাবে কাজ হবে, তার রূপরেখাও ঠিক করে দিয়েছিলেন তিনিই। বেঁধে দিয়েছিলেন ক্ষতিপূরণের অঙ্ক।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, ৩ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ১৫ দিন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের আবেদনপত্র নেওয়া হবে ব্লক ও পুরসভাগুলিতে। দায়িত্বে থাকবেন মহকুমা শাসক এবং সম পদমর্যাদাসম্পন্ন সরকারি আধিকারিকরা। ১৯ থেকে ৩০ জুন সেসব আবেদনপত্রের স্ক্রুটিনি হবে। তারপর ১ থেকে ৮ জুলাইয়ের মধ্যে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে সাহায্যের অর্থ। গোটা প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করতেই এই পরিকল্পনা ছকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ, গত বছর ‘আমফান’-এর ক্ষতিপূরণে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার হয়েছিল রাজ্যের শাসকদল। সেই মামলা এখনও হাই কোর্টে বিচারাধীন। তা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার সরকারি আধিকারিকদের হাতে এই ভার দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঘোষণা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার থেকেই দুই ২৪ পরগনা, পূ্র্ব মেদিনীপুর অর্থাৎ যেসব এলাকা ‘যশে’ কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছে, সেসব জায়গায় শুরু হয়ে গেল ‘দুয়ারে ত্রাণ’-এর কাজ। দিঘা, কাঁথির পাশাপাশি সুন্দরবনের বিভিন্ন ব্লক ও পুরসভাগুলিতে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র নেওয়া শুরু হয়েছে। সকাল থেকে এসব কার্যালয় ভিড় চোখে পড়ল। ১৮ তারিখ পর্যন্ত এই জমা নেওয়া চলবে। এরপর ১৯ তারিখ থেকে প্রতিটি আবেদনপত্র খুঁটিয়ে দেখে যাঁর যতটা ক্ষতি হয়েছে, সরকারি হিসেব অনুযায়ী সেই টাকা তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। দুয়ারে সরকারের মতো এই প্রকল্পও যে সাফল্য ও স্বচ্ছতার সঙ্গে দ্রুত করা সম্ভব হবে, সেই বিষয়ে আশাবাদী সকলেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.