বিক্রম রায়, কোচবিহার: লোকসভা ভোটে জয়ের পর উত্তরবঙ্গে পৌঁছে কোচবিহারে পা রেখেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এই কেন্দ্র থেকে জিতেই উত্তরবঙ্গে ঘাসফুল ফুটিয়েছেন জগদীশ বর্মা বসুনিয়া। সোমবার রাতে সেখানে পৌঁছনোর পরই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, মা-মাটি-মানুষের নামে তিনি মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেবেন। সেই উদ্দেশেই যাওয়া এবং একটি ছোট বৈঠকও রয়েছে বলে জানান। সেই বৈঠক নিয়েই জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ তথা গ্রেটার কোচবিহারের গুরুত্বপূর্ণ নেতা অনন্ত মহারাজের (Ananta Maharaj) সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হতে পারে।
মঙ্গলবার সকালে সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অনন্ত মহারাজ নিজেই জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী যাচ্ছেন তাঁর বাড়িতে। পুলিশ সুপারের (SP) মাধ্যমে তিনি এই খবর পেয়েছেন। সেইমতো তড়িঘড়ি প্রস্তুতিও শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রীর আগমনে বেশ খুশি বিজেপি সাংসদ নগেন রায় তথা অনন্ত মহারাজ। যদিও তাঁর এভাবে আচমকা আসার কারণ তিনি জানেন না বলেই দাবি করলেন।
সোমবার রাতে কোচবিহার (Cooch Behar) পৌঁছে সার্কিট হাউসে রাত্রিযাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেইমতো দুপুর ১২টায় তিনি পৌঁছন মন্দিরে। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, নবনির্বাচিত তৃণমূল সাংসদ জগদীশ বর্মা বসুনিয়া। ছিলেন কোচবিহারের তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, উদয়ন গুহ, পার্থপ্রতিম রায়ও। মন্দিরে পুজো, অঞ্জলি দেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরোহিত তাঁকে আশীর্বাদ করিয়ে কপালে তিলক এঁকে দেন। এখান থেকে বেরিয়ে মমতা পাড়ি দেন চকচকার উদ্দেশে, সেখানেই অনন্ত মহারাজের বাড়ি। মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে হলুদ উত্তরীয় পরিয়ে দেন অনন্ত মহারাজ।
সূত্রের খবর, গ্রেটার কোচবিহারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা অনন্ত মহারাজ আলাদা রাজ্যের দাবিতেই বিজেপিকে সমর্থন জানিয়েছিলেন এতদিন। বিজেপি তাঁকে রাজ্য়সভার সাংসদ করে। কিন্তু পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গ্রেটার কোচবিহারের দাবি খারিজ করেন এবং তাতেই ক্ষুব্ধ হন অনন্ত মহারাজ। বিজেপির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। চব্বিশের ভোটে কোচবিহারে জয়ের পর জগদীশ বর্মা বসুনিয়া জানিয়েছিলেন, অনন্ত মহারাজ তাঁকে সমর্থন করেছিলেন, এত বিপুল ভোটে জিতেছিলেন। সূত্রের খবর, সেই কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে যাচ্ছেন অনন্ত মহারাজের বাড়ি। তবে দুজনের মধ্যে কী কথা হয়, সেদিকে নজর সব মহলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.