কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: তিনদিনের সফর সেরে বৃহস্পতিবারই কলকাতা ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ফেরার আগে বহরমপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে কেন্দ্রের একাধিক সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সুর চড়ান তিনি। সেইসঙ্গে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন যে, দেশের অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানের জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে বসতেও আপত্তি নেই তাঁর। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, আগামিকাল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর তিনবার সাক্ষাৎ হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বহরমপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রের বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কেন্দ্র ব্যাংক, অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি, বিএসএনএল, এয়ার ইন্ডিয়ার মতো সংস্থাগুলিকে বিলগ্নিকরণের পথে এগোচ্ছে। এইসব সংস্থাগুলি ভারতের ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এভাবে আর্থিক বিপর্যয় মোকাবিলা সম্ভব নয়। বরং এভাবে চলতে থাকলে আরও বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে। ধীরে ধীরে দেশটারই বিলগ্নিকরণ হয়ে যাবে।” আর্থিক বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অর্থনীতিবিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার পরামর্শও দেন তিনি। প্রয়োজনে রাজ্যের দলগুলির সঙ্গেও কথা বলার আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল ভারত তৈরির বিরোধিতা না করলেও ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন যে, বিষয়টি কার্যত অসম্ভব। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “ভারত ডিজিটাল হোক, কিন্তু সম্পূর্ণ ক্যাশলেস ভারত হলে কৃষক চাষ করবেন কীভাবে?”
এর পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভবন নির্মাণের কাজ এখনও চলছে। আগামী বছরই বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন শুরু করার লক্ষ্য রয়েছে। প্রয়োজনে কৃষ্ণনাথ কলেজেই শুরু হবে ক্লাস। প্রসঙ্গত সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠক করেছিলেন তিনি। পরে বুধবার সকালে সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ যান তিনি। সেখানে দুটি প্রশাসনিক সভা করেন। এরপর কাশ্মীরের কুলগামে জঙ্গিহানায় আহত মুর্শিদাবাদের শ্রমিক জহিরুদ্দিনেরর বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী। বাড়ির মহিলা, শিশুদের সঙ্গে নিয়ে দাওয়ায় বসলেন। মন দিয়ে শুনলেন তাঁদের কথা। শিশুদের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দিলেন। পূর্ব ঘোষণামতো তাঁদের হাতে তুলে দিলেন ৫০ হাজার টাকা, যা দিয়ে তাঁরা নতুন করে জীবিকার পথ খুঁজে নিতে পারে। বৃহস্পতিবার সকালে ফেরার পথে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেন।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.