স্টাফ রিপোর্টার: জাহাজডুবি হয়েছিল বছর কয়েক আগে। সেই বাংলাদেশি জাহাজের প্রসঙ্গই ভেসে উঠল গঙ্গসাগরের (Gangasagar) প্রস্তুতি বৈঠকে! কারণ, সেই জলযানের জন্যই কচুবেড়িয়ার দিকে বিপজ্জনকভাবে চর জেগে উঠেছে মুড়িগঙ্গায়। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘গঙ্গাসাগর মেলা মিটে যাওয়ার পর যেন এই জাহাজটা সরিয়ে দেওয়া হয়। জাহাজডুবির বিষয়টি জানা ছিল না। তার পর সেখান থেকে চর সৃষ্টি হয়েছে।”
বুধবার নবান্ন (Nabanna) সভাঘরে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি পর্যালোচনা করতে বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই কচুবেড়িয়ার দিকে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা চরের প্রসঙ্গ তোলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী তথা সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সেনা, নৌসেনা, কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট, দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের আধিকারিকরা। মুখ্যমন্ত্রী জাহাজ সরানোর ব্যাপারে এঁদের মতামত চান। প্রত্যেকেই জানিয়ে দেন, ডুবে যাওয়া জাহাজ সরানোর ব্যাপারে তাঁদের কোনও দক্ষতা নেই। বাইরের এজেন্সির সাহায্য নিয়ে কাজটা করতে পারে ড্রেজিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া। জাহাজডুবির মতো কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে নৌসেনাও বিদেশি সংস্থার থেকে সাহায্য নেয়।
মুখ্যমন্ত্রী বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কাছে এই বিষয়ে জানতে চান। তারাও ড্রেজিং কর্পোরেশনের সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দেয়। এর পরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সামনেই গঙ্গাসাগর মেলা রয়েছে, এখনই জাহাজ তুলে আনা সম্ভব না। মেলা সম্পূর্ণ হলে কীভাবে এই কাজ করা যায় তা ভেবে দেখতে হবে। মনে রাখতে হবে, এটি একটি আন্তর্জাতিক জলপথ। সুন্দরবনের জনজীবন যাতে কোনওভাবে প্রভাবিত না হয় সেটাও মাথায় রাখতে হবে।’’ যে জাহাজটি ডুবে গিয়েছে সেই কোম্পানিকেও চিঠি লেখা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
করোনা কালে ফ্লাই অ্যাশ (Fly Ash) নিয়ে বাংলাদেশ ফেরার পথে জাহাজটি ডুবে যায়। সাতজন নাবিককে উদ্ধার করা হয়। আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে সম্প্রতি তাঁদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। কিন্তু জাহাজটিকে উদ্ধার করা যায়নি। আসলে জলপথের মাঝে এই ধরনের জাহাজ থাকা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এক্ষেত্রে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য জায়গাটি ঘিরে রাখা দরকার। ‘মার্কিং’ দরকার। রাতের বেলাতেও যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে তাও দেখা দরকার। মুখ্যমন্ত্রী ভারতীয় নৌসেনার পরামর্শ মতো এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন মুখ্যসচিবকে। তাঁর কথায়, ‘‘কীভাবে জায়গাটা মার্ক করবে, তার জন্য আমরা পরিদর্শন করব।’’ উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার মুড়িগঙ্গায় ড্রেজিং (Drazing) থেকে শুরু করে গঙ্গাসাগর মেলা সংক্রান্ত সেচ দপ্তরের হাতে থাকা সমস্ত কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে সাগরদ্বীপে পরিদর্শন করেছেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.