ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: পাড়ায় পাড়ায় চলছে ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar) কর্মসূচির ক্যাম্প। ডেঙ্গু সচেতনতা অভিযানে নাগরিকদের জরুরি পরিষেবা দেওয়ার এই শিবিরকেই কাজে লাগানোর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার রানাঘাটের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে তিনি বলেন, ‘‘দুয়ারে সরকার কমর্সূচি থেকে ডেঙ্গু সচেতনতা প্রচার হোক। সকলে সর্তক থাকুন। সচেতন থাকুন। আধিকারিকদের বলব, নোংরা দেখলেই পরিষ্কার করুন। যত পরিষ্কার করতে পারব ততই ভাল।’’ মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আবর্জনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।
বুধবার কৃষ্ণনগর থেকেও ডেঙ্গু (Dengue) সংক্রমণ কমাতে জমা জল ও আবর্জনা অপসারনের জন্য প্রতিনিধি, পুরসভা, পঞ্চায়েতকে সঙ্গে নিয়ে একযোগে কাজ করতে নির্দেশ দেন। নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের নির্দেশের পরেই প্রশাসনিক স্তরে তৎপরতা শুরু হয়েছে। ‘দুয়ারে সরকার’ কমর্সূচিতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রচার চালাতে লিফলেট বিলি এবং মাইকে প্রচারের জন্য জরুরি নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আবর্জনা-জমা জল সরানোর সঙ্গে ডেঙ্গুর লক্ষ্মণ ও রক্তপরীক্ষার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এদিন জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে স্বাস্থ্যভবনের বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যই কার্যত উঠে এসেছে।
স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, বিডিওদের সঙ্গে আলোচনা করে ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্প ও এলাকায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রনে আরও জোরদার প্রচার চালানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, গত সপ্তাহের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা হলেও কমেছে। তবে মোট কত আক্রান্ত তা অবশ্য জানানো হয়নি। কমেছে পজিটিভিটি রেটও। এই সপ্তাহে রাজ্যে মোট আক্রান্ত প্রায় ৫ হাজার ৬২৮। পজিটিভিটি রেট ১০ শতাংশের নিচে নেমেছে।
এদিন পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সাফাই অভিযান করেন ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর পূর্বাচলে। রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গু সচেতনতায় জোরদার প্রচার চললেও এদিন কিন্তু ফের দু’জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এর মধ্যে ১৪ বছরের এক কিশোরী এবং ৫৩ বছরের এক প্রৌঢ রয়েছেন। পুরসভার ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভার্গবী মণ্ডল গত রবিবার এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরিবার সূত্রে খবর, দু’ঘণ্টা স্যালাইন দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়। সোমবার অবস্থার অবনতি হয় ডেঙ্গু রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ায় ভরতি করা হয়। সোমবার রাতে সিসিইউতে পাঠানো হয়। ক্রমশ অবস্থার অবনতি হয়। প্রায় ৬ ইউনিট প্লেটলেট দেওয়া হয়েছিল। দক্ষিণ কলকাতার হালতুর আদর্শ বালিকা শিক্ষায়তনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। মঙ্গলবার ফের আরও বারো ইউনিট প্লেটলেট দেওয়া হয়। কিন্তু ক্রমশ কোভিডের মতো ফুসফুস, লিভার, কিডনি সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিকল হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রক্তচাপ ও পালস পাওয়া যাওয়া যাচ্ছিল না। বুধবার রাত বারোটা ৫০ মিনিটে ভার্গবীর মৃত্যু হয়।
এছাড়া কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় উত্তরপাড়ার বাসিন্দা স্বপন ঘোষের। মৃত স্বপন ঘোষের ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গু হেমারেজিক শক, মাল্টিঅর্গান ফেলিওর উল্লেখ্য করা হয়েছে। গত সপ্তাহ থেকেই জ্বর নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভরতি ছিলেন। ৭ তারিখ কলকাতায় আনা হয়। তারপর মৃত্যু হয় তাঁর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.