সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পুরুলিয়া (Purulia) জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে তুমুল ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (WB CM Mamata Banerjee)। সোমবারের প্রশাসনিক সভা থেকে জেলাশাসক এবং প্রশাসনিক কর্তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তিনি। সরকারি অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনিক কর্মীদের বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “এত কিছু দিচ্ছি মানুষকে। তাও কয়েকজন কেন লোভী হয়ে গিয়েছে? আর কত চাই?” এর পরই তিনি বলেন, “আমার পার্টির লোক হলে টেনে চারটে থাপ্পড় মারতাম। তাদের আমি সবসময় শাসন করি।
এদিনের সভার শুরু থেকে ভূমি ও ভূমি সংস্কারের ব্লক স্তরের অফিসে গজিয়ে ওঠা ‘ঘুঘুর বাসা’ ভাঙতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে জেলাশাসককেও কড়া বার্তা দিয়েছেন। আবার কখনও প্রয়োজনে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল। কোনওটা ছিল জমি নিয়ে বেনিয়ম সংক্রান্ত তো কোনওটা ছিল পয়সা দিয়ে মিউটেশন করার বিষয়। কেউ অভিযোগ করেছিলেন টাকা না দিলে মিউটেশন হচ্ছে না তো কেউ বলেছিলেন ইটভাটা-বালি-পাথর উত্তোলনে রাজস্বতে ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে একের পর এক এবিষয়গুলি উঠে আসতে থাকে।
মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ পান, ইটভাটা থেরে পাওয়া রাজস্ব সরকারের কোষাগারে আসার বদলে এক শ্রেণির সরকারি কর্মচারীর পকেটে চলে যাচ্ছে। এর পরই প্রশাসনের উপর খড়গহস্ত হন মমতা। উদ্বেগের সুরে জেলাশাসকের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ডিএম শুনতে পাচ্ছো? এগুলো কিন্তু তৃণমূল করেনি। করছে প্রশাসনের নিচুতলার কর্মীরা।” জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি,”কী জেলা চালাচ্ছে? আমার ধারণাই বদলে গেল।”
তাঁর নির্দেশমাত্রই কাজ হবে। প্রশাসনিক সমস্ত কাজের বিষয়ে এতটাই তৎপরতা প্রত্যাশা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলরামপুরে বেআইনিভাবে জমির কাগজপত্র তৈরি করা দোকান মালিকদের গ্রেপ্তারির নির্দেশ দেন তিনি। সেই নির্দেশ মাফিক কাজ হয়েছে কি না তাও জানতে চান জেলাশাসকের কাছে। সবমিলিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন প্রশাসনিক কাজে সামান্য ঢিলেমিও বরদাস্ত করবেন না তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.