সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লিতে বিজেপি নেতৃত্বের গুলির নিদানের বিরুদ্ধে ফের সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ইস্যুতে নাম না করেই প্রধানমন্ত্রী থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, এমনকী উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকেও তুলোধোনা করলেন মমতা। তাঁর কথায়, “বিজেপির নেতারা গুলি চালাতে বলছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ্যে বলছেন, দেশের শত্রুদের গুলি মারো। সাংবিধানিক পদে থেকে এমন অসাংবিধানিক কথা বলেন কী করে? আর বলার পর তিনি মন্ত্রীই বা থাকেন কী করে?” এ প্রসঙ্গে তিনি যোগী আদিত্যনাথের প্রসঙ্গও টেনে আনেন। কটাক্ষ করে মমতা বলেন, “উত্তরপ্রদেশে গুলি চালানোর নির্দেশ দিচ্ছে। দিল্লিতে গুলি চালাতে বলছে। চারিদিকে হচ্ছেটা কি?”
বুধবার কৃষ্ণনগরের কর্মিসভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে NRC-NPR-CAA থেকে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব তিনি। তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, “গত ৪৫ বছরের মধ্যে এখন দেশে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি। পেটে ভাত দিতে পারছে না। কাজ দিতে পারছে না। শুধু NRC-CAA করে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।” এদিনও বাবা-মায়ের জন্মনথি নিয়ে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “বিজেপি বাবা-মায়ের জন্মনথি দেখতে চাইছে। সেই কাগজ দেখাতে না পারলে আমি-আপনি দেশের নাগরিক নই। এ দেশে জন্মের পর থেকে এত ভোট দিলাম, আর এখন বলছে আমরা নাগরিক নই!” কিন্তু বাংলার মাটি থেকে কাউকে দেশছাড়া হতে দেবেন না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
এদিকে বাজেটে LIC-এর সরকারি শেয়ার বিক্রির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “এয়ারইন্ডিয়া-রেল-এলআইসি বিক্রি করে দিচ্ছে। দেশের সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে চাইছে কেন্দ্র।” দিল্লির নির্বাচনী প্রচারে পাকিস্তান প্রসঙ্গ টেনে আনার প্রবণতাকেও একহাত নেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, “গত সন্ধ্যায় নির্বাচনী প্রচারে অন্তত ১০বার পাকিস্তানের কথা টেনে এনেছে। নির্বাচন আলেই পাকিস্তানের কথা টেনে আনে ওঁরা।”
কৃষ্ণনগরে দাঁড়িয়ে বিজেপির মতুয়াপ্রীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে মমতা। তাঁর কটাক্ষ, “আগে মতুয়াদের কাছে কেউ আসত না। আমিই প্রথম এসেছিলাম। আর ওঁরা এখন মতুয়া-প্রেম দেখাচ্ছে। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ জানেন, তাঁদের আসল বন্ধু কে?” বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেস-সিপিএমকেও তুলোধোনা করেন মমতা। তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, “কংগ্রেস-সিপিএম ঘোলা জলে মাছ ধরে। ওরা বিজেপিকে তলে-তলে সাহায্য করে। আসলে ওরা তিন যমজ ভাই।” পাশাপাশি দলের কর্মীদের উদ্দেশে দলনেত্রীর বার্তা, “দলের নেতারা নয়, বুথস্তরের কর্মীরাই দলের আসল সম্পদ। আমার বার্তা বুথে-বুথে ছড়িয়ে দিন। NRC-NPR নিয়ে ওঁদের বোঝান। আমি যা বলছি, সেটা সকলে বোঝান।” এদিনের কর্মিসভার মঞ্চে হাজির ছিলেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র-সহ অন্যরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.