সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভাত, ওলকচু দিয়ে ট্যাংরা মাছের ঝোল। তা দিয়েই মধ্যাহ্নভোজ সারলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার সঙ্গে মেনুতে ছিল আলু দিয়ে পোনামাছের মাথার চচ্চরি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মাছের মাথা সরিয়ে রেখে আলু দিয়ে ভাত মেখে খেলেন। খাওয়ার সময় তাঁর মুখে তৃপ্তি খেলা করছিল। দ্বিপ্রাহরিক ভোজন সেরে উঠে বললেন, “ঝাল খাই না। তবে দারুণ সুস্বাদু খাবার খেলাম।”
জেলা সফরে দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নতুন কিছু নয়। চায়ের দোকান থেকে মোমোর স্টল অনায়াসে ঘুরে বেড়ান তিনি। কখনও গৃহস্থের বাড়িত ঢুকে তাঁদের হাঁড়ির খবর নিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আবার কখনও স্কুলে গিয়ে খুদেদের সঙ্গে মিশে ফিরে গিয়েছেন নিজের মেয়েবেলায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মিনি সুন্দরবন অঞ্চলে জনসংযোগের এক অনন্য নজির গড়লেন তিনি।
নিম্নবিত্ত গৃহস্থের বাড়িতে বসে তাঁদের রোজকার রান্নার পদেই সারলেন মধ্যাহ্নভোজ। ঘনিষ্ঠমহলে কান পাতলে শোনা যায়, স্বাস্থ্য নিয়ে মারাত্মক সচেতন মুখ্যমন্ত্রী। তাই গত ১২-১৩ বছর দুপুরে ভাত খাননি তিনি। কিন্তু বুধবার সেই সমস্ত নিয়ম ভাঙলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। সাধারণ মানুষের মাঝে বসেই দুপুরে ভাত খেলেন তিনি। খাওয়া-দাওয়া শেষে মুখ্যমন্ত্রীর অনুযোগ, ভাতটা শক্ত কেন? একইসঙ্গে জানতে চান, রেশন থেকে কি এমনই মোটা চাল দেয়? গৃহস্থরা জানান, রেশন থেকে এই চালই দেয়। এরপরই চালের মান উন্নয়নের পরামর্শ দেন প্রশাসনিক কর্তাদের।
তিনদিনের সফরে মিনি সুন্দরবনে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি জনতার সঙ্গেও সারলেন আলাপচারিতা। শুনলেন তাঁদের অভাব অভিযোগও। হিঙ্গলগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামেও জলের সমস্যা রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। দ্রুত সেই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন সকালে লঞ্চে চেপে নদীর পাড়ের গ্রামে পৌঁছেছিলেন মমতা। ইছামতী নদীতে লঞ্চের স্টিয়ারিং হাতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। টাকির খুদেদের এক স্কুলেও যান তিনি। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান। খুদে পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেন উপহার। এরপর সোজা চলে যান গ্রামে। সেখানেও গ্রামবাসীদের হাতে শীতবস্ত্র হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর টাকির গ্রামের বসে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। চলে যান টাকি কলেজে। সেখানে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি, ঐতিহ্যশীল টাকি কলেজের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের জন্য এক কোটি টাকা দেবেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.