Advertisement
Advertisement
Mamata Banerjee

বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে রাজ্যে ছুটি, আদিবাসী আবেগ উসকে বাঁকুড়া থেকে ঘোষণা মমতার

একুশের আগে যেন রাজ্য রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠলেন সংগ্রামী আদিবাসী নেতা।

CM Mamata Banerjee announces holiday on Birsa Munda's birthday from Bankura| Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:November 23, 2020 2:30 pm
  • Updated:November 23, 2020 8:34 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেন নতুন করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন সংগ্রামী আদিবাসী নেতা বিরসা মুন্ডা (Birsa Munda)। বাঁকুড়ায় অমিত শাহ ভুল মূর্তিতে মাল্যদানের পর নানা তরজায় জড়িয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদল। দু’পক্ষের কে কতটা শ্রদ্ধা জানাতে পারে, তা প্রমাণের তাগিদ বাড়ছিল। এ প্রসঙ্গেই এবার আরও বড় ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার বাঁকুড়ার খাতড়ায় জনসভা থেকে ঘোষণা করলেন, বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে আদিবাসীদের আবেগের কথা মাথায় রেখে ছুটি দেওয়া হবে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের জনসমর্থন অটুট রাখতেই যে তাঁর এই সিদ্ধান্ত, তা বুঝতে অসুবিধা নেই সামান্য রাজনৈতিক সচেতন মানুষের।

গত ৫ নভেম্বর। রাজ্য সফরে এসে বাঁকুড়ার (Bankura) পুয়াবাগানে এক আদিবাসীর মূর্তিতে মাল্যদান করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। দাবি করেছিলেন, বিরসা মুন্ডার মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে শাসকদল দাবি তোলে, ওই মূর্তিটা আদিবাসী নেতা বিরসা মুন্ডার নয়, তা এক আদিবাসী শিকারির। এ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে অনেক জলঘোলা হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব মূর্তির শুদ্ধিকরণ করেন। এরপর স্থানীয় বিজেপি সাংসদ সেখানে গিয়ে ঘোষণা করেন, ওই মূর্তির পাশে ৪০ ফুট উঁচু বিরসা মুন্ডার মূর্তি তৈরি করে দেবেন। আদিবাসী সংগঠনগুলিও এই রাজনীতির বিরোধিতায় সরব হয়ে উঠেছিলেন। তাঁদের সম্মানীয় নেতাকে নিয়ে কোনওরকম রাজনীতি বরদাস্ত করা হবে না, এই হুমকি দিয়ে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার পড়েছিল। অচিরেই রাজ্য রাজনীতিতে সামগ্রিকভাবে বেশ গুরুত্ব পেয়ে যায় বিরসা মুন্ডার নাম।

Advertisement

[আরও পড়ুন: আগামী জুনের পরও বিনামূল্যে রেশন পাবে রাজ্যবাসী, বাঁকুড়া থেকে বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]

মুখ্যমন্ত্রীর বাঁকুড়া সফরকে অমিত শাহর পালটা হিসেবে ধরে নিয়ে অনেকেরই অপেক্ষা ছিল, বিরসা মুন্ডা নিয়ে তিনি কী বলেন, তা শোনার। সোমবার খাতড়ার জনসভায় যথারীতি এ বিষয়ে অমিত শাহকে বিঁধলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ”যে মূর্তিতে মালা দেওয়া হয়েছিল, তা তো বিরসা মুন্ডারই নয়। এক আদিবাসী শিকারির। আমি শিকারি বলে তাঁকে ছোট করছি না, সেও আমার ভাই। কিন্তু এই মিথ্যাচারটা হল কেন?” এরপরই তাঁর ঘোষণা, আদিবাসী ভাইবোনেদের আবেগের কথা মাথায় রেখে এরপর থেকে সংগ্রামী বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে ছুটি দেওয়া হবে। সেটাই হবে প্রকৃত সম্মান জ্ঞাপন। এই ঘোষণার পরই উচ্ছ্বাসে ভাসেন উপস্থিত জনতা। মূর্তি প্রসঙ্গে তিনি এদিন কলেজ স্ট্রিটে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার বিষয়টি নিয়েও অমিত শাহকে বিঁধলেন। কারণ, ২০১৯এ তাঁর কলকাতা সফরের সময়ে বিশৃঙ্খলা থেকে এই ঘটনা ঘটে।

[আরও পড়ুন: ‘দিলীপবাবুর ঠোঁট ও জিভের চিকিৎসা প্রয়োজন’, ফের বেফাঁস জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক]

আদিবাসীদের প্রতি কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘লোকদেখানো’ মনোভাবকেও তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। অমিত শাহর আদিবাসী বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ নিয়ে বলেন, ”ফাইভ স্টার হোটেল থেকে রান্না করা খাবার এনে আদিবাসীদের বাড়িতে বসে খাওয়া! এখন সবাই সবটা জেনে গিয়েছে। আদিবাসী পরিবারে রান্না হওয়া খাবারটা তো খাননি উনি। মা-বোনেরা ধনেপাতা কাটছে, বাঁধাকপি কাটছে। ওই ধনেপাতা কোনও খাবারে তো ছিল না। বাঁধাকপি কোথায়? পোস্তর বড়া খেয়েছে আমি এমনটা করি না। আমি কোনও আদিবাসীর বাড়িতে গেলে, তাদের খাটিয়ায় বসি।” মুখ্যমন্ত্রীকে এ প্রসঙ্গে পালটা খোঁচা দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তিনি বলেন, “সিঙ্গুরে বিরিয়ানি খেয়ে অনশন করেছিলেন মমতা। তাই তিনি দলিত বাড়িতে ডাল-ভাতের মর্ম বুঝতে পারবেন না।” প্রসঙ্গত, এর আগেও রাজ্যে ভোটের প্রচারে এসে নকশালবাড়িতে এক আদিবাসী পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ করেছিলেন অমিত শাহ। তা নিয়েও বিস্তর রাজনীতি হয়েছিল। ওই দরিদ্র পরিবারটি কয়েকদিন পরই তৃণমূলে যোগদান করে এবং রাজ্য সরকারি চাকরি পান পরিবারের বধূ। সুতরাং, এই বিষয়টিও যে ভোট রাজনীতির একটা অঙ্গ, তা এতদিনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement