শাহজাদ হোসেন, সামশেরগঞ্জ: গঙ্গা তীরবর্তী এলাকা মানেই ভাঙনের (Erosion)অভিশাপে জর্জরিত। তা জনজীবনকে বিপর্যস্ত, অনিশ্চিত করে তোলে। সেই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের খোঁজ করেন গঙ্গাপাড়ে বাসিন্দারা। রাজ্য সরকারও এ বিষয়ে তৎপর। মালদহ, মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) নদীপাড়গুলি ভাঙন কবলিত। সামান্য জোয়ার-ভাঁটার খেলাতেই বাঁধ ভেঙে প্লাবন এখানকার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। তার সমাধানে এবার রাজ্য সরকার মোট ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল। শুক্রবার সামশেরগঞ্জে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে এই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। এর অর্ধেক টাকা দেবে সেচদপ্তর। সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে মঞ্চে ডেকে এই নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েক বছরের মধ্যে এই টাকা দিয়ে নদীপাড়ের ভাঙন মেরামত ছাড়াও ঘরহারাদের নতুন করে ঘর তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছে ৮৬ জনকে।
বৃহস্পতিবার মালদহের প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই ভাঙন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে সমস্যার সমাধানের কথা বলেন। এ প্রসঙ্গে ম্যানগ্রোভের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। মালদহের প্রশাসনিক বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী স্থির করেন, দুই জেলার সীমানা লাগোয়া সামশেরগঞ্জের ভাঙন বিধ্বস্ত এলাকা দেখতে যাবেন। সেইমতো শুক্রবার সকাল সকালই বেরিয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে ছিলেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা।
গঙ্গার পাড়ে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী পরিস্থিতি দেখে নানা খুঁটিনাটি জেনে নেন প্রশাসনের কর্তাদের কাছে। এরপর জমির পাট্টা বিলি অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাঙন নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি ফের কেন্দ্রকে দায়ী করেন। কেন্দ্রের কাছে বকেয়া টাকা এখনও পাওয়া যায়নি বলে অনেক কাজই করতে অসুবিধা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গেই নিজের অভিজ্ঞতার কথা সকলের সামনে তুলে ধরেন। বলেন, ”আমি এখানে আসার পথে অনেক জায়গায় গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়িয়েছিলাম। এক জায়গায় একজন বৃদ্ধ মানুষ আমার হাতটা ধরে বললেন, ১০০ দিনের কাজ করেছি। কিন্তু টাকা এখনও পেলাম না। আমি বললাম, কেন্দ্র এখনও টাকা দেয়নি। টাকা পেলেই আপনাকে আমরা দিতে পারব।” এরপর তাঁর নির্দেশ, যাঁরা ১০০ দিনের কাজ করে টাকা এখনও পায়নি, তাঁদের অন্যান্য কাজে লাগাতে, যাতে এই মুহূর্তে টাকা হাতে থাকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.