ফাইল ছবি।
অর্ণব দাস, বারাকপুর: আড়িয়াদহের ‘ডন’ জয়ন্ত সিংয়ের তালতলা ক্লাব সিল করল পুলিশ। তাঁকে নিয়ে এদিন ওই ক্লাবে ঘটনার পুনর্নির্মাণে যান তদন্তকারীরা। তার পর ক্লাব সিল করে দেওয়া হয়। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কেউ ওই ক্লাবে প্রবেশ করতে পারবেন না বলেই জানানো হয়েছে। বেশ কিছুক্ষণ তল্লাশি চালিয়ে ওই ক্লাব থেকে একটি লোহার রডও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই লোহার রড দিয়ে ক্লাবের সদস্যরা মারধরের সময় ব্যবহার করত বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।
সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। সেখানে দেখা যায়, প্রায় আটজন যুবক। জনাচারেক মিলে একজনের হাত পা ধরে চ্যাংদোলা করেছে। সেই অবস্থাতেই ঝুলিয়ে লাঠি জাতীয় কিছু দিয়ে চলে গণপিটুনি। তালতলা ক্লাবে ওই মারধরের ঘটনাটি ঘটে। ভিডিওটি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরই বারাকপুর পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্তে নামে। গ্রেপ্তার হন জয়ন্ত সিং। ওই ঘটনারই পুনর্নির্মাণ করা হয় শুক্রবার। ক্লাব থেকে বেরনোর সময় স্বমেজাজে দেখা যায় জয়ন্তকে। সাংবাদিকদের পালটা প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি। বলেন, ‘‘ভিডিওতে আমাকে দেখেছিলেন?’’কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের সঙ্গে সম্প্রতি জয়ন্ত সিংয়ের ছবি প্রকাশ্যে আসে। মদন মিত্রের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই বলেই দাবি জয়ন্তর।
প্রসঙ্গত, দুধ বিক্রেতা থেকে আড়িয়াদহের ‘ত্রাস’ হয়ে ওঠেন জয়ন্ত। আড়িয়াদহের মৌসুমী মোড় থেকে কিছুটা এগিয়ে প্রতাপ রুদ্র লেনে দুটি বাড়ি জয়ন্তর। একটা পুরনো। জনবসতিপূর্ণ এলাকার সেই বাড়িতে চলে ঘাটাল। নতুন যে বিশাল বাড়ি, তা নাকি হয়েছে সরকারি জমির উপর। তোলাবাজি, হুমকি, খুনের চেষ্টা, মারধর-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এলাকায় কেউ জমি কিনলেও মোটা টাকা দিতেই হত জয়ন্তকে। আইন-আদালত কোনও কিছুরই পরোয়া করতেন না তিনি। ফলে নিজের মতো করে সাম্রাজ্য তৈরি করছিলেন। বিহার থেকে ছেলেদের নিয়ে আসতেন কাজে লাগানোর জন্য। জয়ন্তর বাড়বাড়ন্ত নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তা নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রথমবার মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জয়ন্তকে ‘পরিচিত গুন্ডা’ বলে দাবি করেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এডিজি আইনশৃঙ্খলা মনোজ বর্মা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.