সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: দুই বিঘা জমি। চারিদিক খোলা। জমির অনেকটা অংশে বাঁশের অস্থায়ী তাঁবু। দিনের শুরুতে প্রায় ১০-১২ জন প্রতিমা শিল্পী পরিকল্পনায় ব্যস্ত। তার পরেই কাজ শুরু। রূপ দেওয়া হচ্ছে দুর্গা প্রতিমার। না অনেকগুলো প্রতিমা নয়। একটি প্রতিমা তৈরিতে নাওয়া-খাওয়া ভুলেছেন শিল্পীরা। এক বিরাট যজ্ঞে সামিল তাঁরা! গড়ে উঠছে প্রায় ১১১ ফুটের দুর্গা প্রতিমা।
হ্যাঁ! ঠিকই পড়েছেন। রানাঘাটের (Ranaghat) কামালপুর এলাকায় অভিযান সংঘ তৈরি করছে বাংলার সবথেকে বড় প্রতিমা! এবারের তাঁদের দুর্গা পুজোর ৫৫ তম বর্ষ। গতবছরের পুজোর পর থেকেই পুজো কমিটি ভাবতে থাকে বিশেষ কিছু করার। সেই থেকেই এই সিদ্ধান্ত। প্রায় ১ বছর ধরে আলোচনা। বাংলা নববর্ষের দিন থেকে কাজ শুরু। শুধু মাটির তৈরির অত বড় প্রতিমা দাঁড় করানো কঠিন। তাই থাকবে ফাইবারের কাজ। প্রাথমিক উচ্চতা যা বলা হচ্ছে, তার থেকেও উচ্চতা বাড়বে বলে দাবি শিল্পীদের।
ফাঁকা জমিতে শায়িত অর্ধেক তৈরি দেবী প্রতিমা। মাটি, কাঠ, বিচুলি সাধারণ পদ্ধতিতেই তৈরি হচ্ছে। এর পরেই তা পাবে ফাইবারের রূপ। প্রতিমা দাঁড় করাতে সাহায্য নেওয়া হবে ইঞ্জিনিয়ারদেরও। সেই প্রতিমা দাঁড় করিয়ে, দর্শনের ব্য়বস্থা করাই কমিটি ও শিল্পীদের কাছে চ্য়ালেঞ্জ। কারণ এর আগে কলকাতায় ৮৮ ফুট দুর্গা তৈরি করে তা বন্ধ করে দিতে হয়েছিল।
প্রতিমা শিল্পী নীতিশ মুন্সি বলেন, “বৈশাখ মাস থেকে আমাদের এই কাজ শুরু হয়েছে। সবচেয়ে বড় দুর্গা প্রতিমা তৈরির চ্যালেঞ্জ নিয়েছি আমরা। প্রায় ১০-১২ শিল্পী মিলে এই কাজ করছি। এখন মাটির কাজ চলছে। এর পর প্রতিমা ফাইবারের রূপ পাবে। পুজোর ১০ দিন আগে প্রতিমা পুরোপুরি তৈরি করে দিতে পারব বলে আশা করছি।”
আরেক শিল্পী বাপি পাল বলেন, “আমাদের এই প্রতিমা ফাইবারের রূপ পাওয়ার পর উচ্চতা আরও বেড়ে যাবে। সেই উচ্চতা কত এখনই তা বলতে চাই না। মাটির কাজের পর প্রতিমা দাঁড় করাতে ইঞ্জিনিয়ারদের সাহায্য নেওয়া হবে। এখানে খোলা জায়গা রয়েছে সাধারণ মানুষের দেখতে অসুবিধা হবে না।” পুজোর বাকি প্রায় তিন মাস। ধীরে ধীরে পুজোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বাঙালি। ভরা বর্ষাতেও শরতের হাওয়া বইছে কামলপুরের বাসিন্দাদের মনে। প্রতিদিন তাঁরা দেখছেন, মা সাজছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.