রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ছাত্রমৃত্যু (Jadavpur University Student Death) ও তার নেপথ্যে র্যাগিংয়ের অভিযোগ নিয়ে এখনও সরগরম গোটা রাজ্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। তার মধ্যেই আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলার বারোবিশা জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের হস্টেলে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল। নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে চোর সন্দেহে মারধরের অভিযোগ পেয়ে অবশ্য ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে ৩ ছাত্রকে চিহ্নিত করে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই ঘটনার পরেই এই স্কুল হোস্টেলে সিসিটিভি (CCTV) বসানোর দাবিতে সরব হয়েছেন অভিভাবকরা। হস্টেলে এমন ঘটনা এড়াতে তৈরি হচ্ছে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি।
অসম-বাংলা সীমানা লাগোয়া বারোবিশার জওহর নবোদয় বিদ্যালয় (JNV) জেলায় নাম করা বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি। কেন্দ্রীয় বোর্ডের এই বিদ্যালয়ে দূরদূরান্ত থেকে ছাত্ররা পড়তে আসে। আবাসিক এই স্কুলে হস্টেলে থেকেই সবাইকে পড়াশোনা করতে হয়। এমন একটি স্কুলেই এবার উঠল র্যাগিংয়ের (Ragging)অভিযোগ। জানা গিয়েছে, গত ৮ আগস্ট এই বিদ্যালয়ের হস্টেলে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের মানি ব্যাগ হারিয়ে যায়। সন্দেহ গিয়ে পড়ে নবম শ্রেণির এক ছাত্রের উপর। আর সেই সন্দেহের বশেই নবম শ্রেণির ওই ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ ওঠে একাদশের তিন ছাত্রের বিরুদ্ধে।
পরে নবম শ্রেণির ওই ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বাইরের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। এরপরেই ঘটনা নজরে আসে স্কুল কর্তৃপক্ষের। ঘটনায় কমিটি গড়ে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেয় স্কুল কতৃপক্ষ। তিন ছাত্রকে সাসপেন্ড (Suspend) করে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। পরে হারিয়ে যাওয়া মানিব্যাগ খুঁজে পায় একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র। তবে এই ঘটনার পর আর নবম শ্রেণির ওই ছাত্র স্কুলে ফিরতে রাজি হচ্ছে না। রবিবার বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। নিগৃহীত ছাত্রের কাকা সুজয় সাহা বলেন, “আমরা ১১ আগস্ট স্কুলে এসে মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছিলাম। রবিবার আবার স্কুলে এসে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছি। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে, অভিযুক্ত তিন ছাত্রকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের ছেলে খুব আতঙ্কিত। আর স্কুলে ফিরতে চাইছে না। স্কুলের হস্টেলে আমরা সিসিটিভি বসানোর দাবি তুলেছি। এভাবে একটা স্বপ্ন নষ্ট হয়ে গেলে তার দায় নেবে কে?”
জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ (TIC) অরুণকুমার সূত্রধর বলেন, “যা ঘটেছে, একেবারেই ঠিক হয়নি। অভিযুক্ত তিন একাদশ শ্রেণির ছাত্রকে চিহ্নিত করে সাসপেন্ড করা হয়েছে। হস্টেল থেকে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনার কথা স্বীকারও করেছে। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সেটা পরে স্কুল কমিটি বৈঠক করে ঠিক করবে। এই ঘটনা এই বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করেছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.