Advertisement
Advertisement
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় গন্ডগোল

উপাচার্য বনাম সহ-উপাচার্যের দ্বন্দ্ব, নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে

দুপুর থেকে সন্ধে পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ সহ-উপাচার্যের।

Clash over VC and Pro VC's conflict at Kalyani University
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 24, 2020 9:42 pm
  • Updated:January 24, 2020 9:49 pm  

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: উপাচার্যের সঙ্গে সহ-উপাচার্যের ইগোর লড়াই চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। উপাচার্য রেজিস্ট্রারকে ছুটিতে পাঠানো এবং পরে সহ-উপাচার্য তাঁকে পুনর্বহাল করায় তা পৌঁছে যায় চরমে। তারই পরিণতিতে উপাচার্যের সঙ্গে সহ উপাচার্যের তীব্র বাদানুবাদ, উপাচার্যের ঘরের সামনে দীর্ঘক্ষণ ধরে অবস্থান বিক্ষোভ, শেষ পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে সহ-উপাচার্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়া – নজিরবিহীন একাধিক ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। তার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে। শিকেয় উঠল পঠনপাঠন।

উপাচার্য শংকর কুমার ঘোষের সরাসরি অভিযোগ, সহ-উপাচার্য গৌতম পালের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন। তেমনই পাল্টা অভিযোগ করেছেন সহ-উপাচার্য গৌতম পালও। উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্যের ইগোর লড়াই শুক্রবার চলে আসে প্রকাশ্যে।  বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ সহ-উপাচার্য গৌতম পাল উপাচার্যের সেক্রেটারিয়েটের মধ্যে একটি ঘরে ঢোকার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, সহ-উপাচার্য সেই ঘরটি দখল করার জন্য এসেছিলেন। কিন্তু তাঁকে বাধা দেন উপাচার্যের সেক্রেটারিয়েটের একজন অফিসার এবং সিকিউরিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা। ওই ঘরে সহ উপাচার্যকে ঢুকতে না দিয়ে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বেআইনি অস্ত্র বিক্রির অভিযোগ, এবার জালে কলকাতা পুলিশের হোমগার্ড]

ক্ষিপ্ত হন পড়েন সহ-উপাচার্য গৌতম পাল। তিনি উপাচার্যের ঘরের সামনে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে কথাবার্তা বলা
শুরু করেন। উভয়ের মধ্যে তুমুল তর্কাতর্কি হয়। এরপর উপাচার্যের ঘরের সামনে মাটিতেই বসে পড়েন সহ-উপাচার্য গৌতম পাল।খাওয়াদাওয়া না করে তিনি উপাচার্যের ঘরের সামনে মাটিতে বসে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। বিকেল গড়িয়ে সন্ধে পর্যন্ত চলে অবস্থান বিক্ষোভ। সন্ধে নাগাদ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকরা তাঁকে পরীক্ষা করার পর সহ-উপাচার্যকে কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভরতি করা হয়। 

ঘনিষ্ঠ মহলে সহ-উপাচার্য গৌতম পাল অভিযোগ করেছেন, ‘অশিক্ষক ও অধ্যাপকদের একাংশের সঙ্গে উপাচার্য ভাল আচরণ করছেন না।  তাঁরা প্রতিবাদ করছেন। সেই বিষয়ে কথা বলার জন্য আমি একটা ঘরে ঢুকতে চেয়েছিলাম। আমাকে ঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বাধা দেওয়া হয়েছে। দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। তাই আমি উপাচার্যের ঘরের সামনে মাটিতে বসে পড়েছিলাম।’ যদিও তিনি উপাচার্যের ঘরের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করেছেন, তা মানতে নারাজ সহ-উপাচার্য। 
অন্যদিকে, উপাচার্য শংকর কুমার ঘোষের পালটা অভিযোগ, ‘সহ-উপাচার্যকে এর আগে ঘর দেওয়ার কথা বলা হলেও তিনি তা নিতে রাজি হননি। তখন নিজের ফ্যাকাল্টির ঘরে বসেই কাজ করবেন বলে জানিয়েছিলেন। এখন তিনি ঘর নেওয়ার জন্য আবেদন করতেই পারেন। অথচ তিনি আবেদন করতে রাজি নন আমার কাছে।বিশ্ববিদ্যালয় সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন।’

[আরও পড়ুন: বৃহন্নলাদের ‘অত্যাচারে’ অসুস্থ শিশুর মৃত্যু, ঝাড়গ্রামে শিলদায় উত্তেজনা]

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, রেজিস্ট্রার দেবাংশু রায়ের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলাকালীন ১৭ জানুয়ারি থেকে রেজিস্ট্রার দেবাংশু রায়কে ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন উপাচার্য। সেই সময় উপাচার্যের নির্দেশে কার্যকরী রেজিস্ট্রার পদে বসানো হয় অধ্যাপক সুভাষ সরকারকে। যদিও তারপর একদিন উপাচার্য অফিসে না আসায় সহ-উপাচার্য দেবাংশু রায়কে রেজিস্ট্রার পদে পুনর্বহাল করেন সহ-উপাচার্য। যা কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি উপাচার্য শংকর কুমার ঘোষ। সহ-উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করে উপাচার্য সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘উনি আমার নির্দেশ পর্যন্ত অমান্য করেছেন। তদন্ত কমিটি গঠন করে দেবাংশু রায়কে ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও তাকে উনি পুনর্বহাল করেছেন। যা তিনি কিছুতেই করতে পারেন না। তাছাড়া, আমি সেদিন আমার রেসিডেনশিয়াল অফিসে বসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম করেছিলাম। রেজিস্টারকে পুনর্বহাল করার ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের কোনও অনুমতি ছিল না।’ 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement