সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: করোনা আবহে রেশনে বেনিয়মের অভিযোগে বুধবার রণক্ষেত্র চেহারা নিল পুরুলিয়া। ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের গাড়িতে। ইটবৃষ্টিতে আহত হন এক পুলিশ কর্মীও। ইতিমধ্যেই রেশন ডিলারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অন্যদিকে, রেশন না পেয়ে রায়গঞ্জের শিসগ্রামে ডিলারের সহযোগীকে বেধড়ক মারধর করেন গ্রাহকরা। বাজার বসাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বোমাবাজি হয় হুগলির খানাকুলে।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার সকালে। জানা গিয়েছে এদিন সকালে পুরুলিয়ার আঁকরোর রেশন দোকানে লাইন দেন স্থানীয়রা। অভিযোগ, বরাবরের মতোই এদিনও বরাদ্দ সামগ্রীর থেকে নির্দিষ্ট অংশ কেটে তা স্থানীয়দের দেওয়া হচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে কেন বরাদ্দের তুলনায় কম সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই। মুহূর্তে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। রেশন ডিলার ও তাঁর সহযোগী সিভিক ভলান্টিয়ারের উপর চড়াও হন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বরো থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। স্থানীয়রা দাবি করেন যে, রেশন ডিলারকে তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ায় লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পালটা ইটবৃষ্টি শুরু করে স্থানীয়রা। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়িতে। ইটের আঘাতে জখম হন এক পুলিশ কর্মী। সূত্রের খবর, গ্রেপ্তার করা হয়েছে রেশন ডিলারকে। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানিয়েছেন, অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুতই যাতে গণবন্টন ব্যবস্থা স্বাভাবিক করা যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।
শুধু পুরুলিয়া নয়, বর্ধমান, উত্তর দিনাজপুর থেকে হুগলি জেলায় জেলায় ছবিটা কার্যত একই। এদিন রায়গঞ্জের বড়ুয়ার শিসগ্রামে রেশনের সামগ্রী না পেয়ে ডিলারের সহযোগীকে বেধড়ক মারধর করে গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতেই গ্রামে রেশনের চাল, ডাল আটা এসেছে। কিন্তু তা সরিয়ে দিয়েছে ডিলার প্রবোধ মণ্ডল।
শহর কলকাতার অবস্থাও খুব একটা আলাদা নয়। রেশন দোকানে প্রচুর লাইন। সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেনিয়মের ছবি প্রকাশ্যে আসছে।
বাজার বসাকে কেন্দ্র করে এদিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে খানাকুলের বালিপুর বাজার। ব্যাপক বোমাবাজি ও অশান্তির অভিযোগে আটক করা হয় দুই তৃণমূল নেতাকে। হুগলির জেলা তৃণমূলের সভাপতি এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, যদি কেউ লকডাউনে নিয়ম না মানেন সে যে দলেরই হন, তাঁকে শাস্তি পেতে হবে।
তবে এসবের পাশাপাশি উঠে আসছে নাগরিকদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার নিদর্শনও। রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতেও লকডাউনের একসপ্তাহ পরেও বাজারে মানুষের ভিড়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং-এর বালাই না করেই চলছে বিকিকিনি। কতদিনে সচেতন হবে মানুষ, এখন প্রশ্ন এটাই।
ছবি: উদয়ন গুহরায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.