সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে জঙ্গলে করোনায় (Coronavirus) মৃত রোগীর দেহ সৎকারের চেষ্টা। পুলিশের এই উদ্যোগ ঘিরে বুধবার মাঝরাতে ধুন্ধুমার বাঁকুড়ার জয়পুরে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আপত্তির জেরে জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। অভিযোগ, জনতার ছোঁড়া ইটের ঘায়ে জখম হয়েছেন কয়েকজন পুলিশকর্মী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পালটা লাঠিচার্জ করে পুলিশও।
জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার ওন্দা কোভিড হাসপাতাল বুধবার রাতের দিকে মৃত্যু হয় জয়পুরের করোনা আক্রান্ত এক বাসিন্দারা। নিয়ম অনুযায়ী, করোনায় মৃতদের সৎকারে বিশেষ পদ্ধতিতে হয় এবং প্রশাসনের সাহায্য নিয়েই তা করার কথা। কিন্তু জয়পুরের স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই করোনা রোগীর মৃতদেহ সৎকারের জন্য রাতের অন্ধকারে চুপিসাড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে। আর তা করা হয়েছিল পুলিশের সাহায্যেই। রাতে জঙ্গলে লোকজনের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হওয়ায় বাসিন্দারা একে একে বাড়ি থেকে বেরিয়ে জঙ্গলে গিয়ে দেখেন, কোভিড রোগীর দেহ সৎকারের তোড়জোড় চলছে। ঘটনাস্থলে হাজির পুলিশও। তখনই তাঁরা আপত্তি জানান।
গ্রামবাসীদের স্পষ্ট বক্তব্য, জঙ্গলে করোনা রোগীর দেহ দাহ করলে সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাঁদের জীবন বিপন্নতার মুখে পড়বে। তাই তাঁরা সেখানে শেষকৃত্য করতে দিতে নারাজ। জনতার সঙ্গে এ নিয়ে পুলিশের তর্কবিতর্ক বাঁধে। মাঝরাতে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে ইট-পাটকেল নিয়ে পুলিশের উপর আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ। এতে কয়েকজন পুলিশকর্মী জখম হন। উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশও পালটা লাঠিচার্জ করেছে। এর জেরে বেশ কিছুক্ষণ জয়পুর-বিষ্ণুপুর সংযোগকারী রাস্তা অবরোধ করা হয়। দীর্ঘক্ষণ পর অবশ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এর আগেও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এভাবে করোনায় মৃত রোগীর সৎকার নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, লোকালয়ের আশেপাশে কোভিডে মৃতদের শেষকৃত্য করা যায় না। যাঁরা সৎকারের কাজে অংশ নেন, রীতিমতো নিয়ম মেনে, নিজেদের সুরক্ষা নিয়ে তবেই সেই কাজ করা যায়। তার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রশাসনের। কিন্তু অনেকেই নিয়ম না মেনে রাতের অন্ধকারে চুপিসাড়ে দেহ দাহ করার চেষ্টা করেন। তাতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা অনেকটা বেশি থাকে। করোনা থেকে জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে এত সচেতনতা প্রচার চলছে, তা সত্ত্বেও হুঁশ যেন ফিরছে না। জয়পুরের ঘটনায় আবার কাঠগড়ায় পুলিশও। যাঁদের উপর জনতার সুরক্ষার দায়িত্ব, তাঁদের বিরুদ্ধেই উঠছে নিয়মভঙ্গের অভিযোগ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.