নবেন্দু ঘোষ, বসিরহাট: টানা প্রায়তিন ঘণ্টা টানাপোড়েনের পর অবশেষে পুলিশের প্রবল বাধার মুখে পিছু হঠল বিজেপি। দলের নিহত কর্মীদের রাস্তায় দাহ করা থেকে পিছিয়ে এল৷ গ্রামেই ফেরানো হচ্ছে তাঁদের দেহ। রাতে গ্রামেই সৎকার করা হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতির প্রতিবাদে সোমবার বসিরহাটে ১২ ঘণ্টা বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। সেই সঙ্গে গোটা রাজ্যে পালিত হবে কালাদিবস।
রবিবার বিকেলে ময়নাতদন্তের পর বসিরহাট হাসপাতালের তরফে মৃত দুই বিজেপি কর্মীর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপরই নিমতলা ঘাটে দেহ সৎকারের উদ্দেশে কলকাতায় নিয়ে আসার বন্দোবস্ত করে বিজেপির প্রতিনিধিদল। বসিরহাট থেকে মিনাখাঁ আসার পথে মালঞ্চ মোড়েই পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তাঁরা। নিরাপত্তার খাতিরে পুলিশ গাড়ি-সহ মিছিল আটকে দেয়। ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ।
কোনওক্রমে দেহ নিয়ে ফের কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয় বিজেপি নেতৃত্ব। ভেঙে দেওয়া হয় পুলিশের ব্যারিকেড। মিনাখাঁয় ফের আটকে দেওয়া হয় সমস্ত গাড়ি। এরপর রাস্তার উপরেই দেহ সৎকারের আয়োজন শুরু করেন রাহুল সিনহারা। মুহূর্তের মধ্যে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। রাহুল সিনহা বলেন, “পরিবারের ইচ্ছে মেনে দেহ সৎকারের জন্য কলকাতা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেখানে কোনও রকম মিটিং-মিছিল করা হত না।” তাঁর দাবি, পুলিশ অকারণেই তাঁদের বাধা দিয়েছে৷ পুলিশের জন্যই দেহ নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। দীর্ঘক্ষণ টালবাহানার পর পুলিশের আশ্বাসে দেহ সন্দেহখালিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় দল। আজ রাতে সেখানেই দাহ করা হবে নিহত বিজেপি কর্মীদের। সোমবার বসিরহাটে ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার রাতে। এদিন বিকেলে সন্দেশখালি ন্যাজাট থানার হাটগাজি এলাকায় পতাকা খোলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল-বিজেপি। দু’পক্ষের সংঘর্ষে মৃত্যু হয় ১ তৃণমূল কর্মী ও দুই বিজেপি কর্মীর। রাতেই দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিজেপির দাবি, নিখোঁজ আরও এক কর্মী। পাশপাশি তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, তাঁদেরও বেশ কয়েকজন কর্মী নিখোঁজ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ন্যাজাট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা।
রবিবার দুপুরে বসিরহাট হাসপাতালে পৌঁছান বিজেপি প্রতিনিধিদল৷ দলে ছিলেন দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন সিং, সায়ন্তন বসু, মুকুল রায়-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। নিহত বিজেপি কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। ন্যাজাটের ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন মুকুল রায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.