বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: টিএমসিপি সদস্যদের ঢুকতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল নদিয়ার মাজদিয়া সুধীরঞ্জন লাহিড়ী কলেজ। জানা গিয়েছে, নবীনবরণের আয়োজন কে করবে তা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই দু’পক্ষের সদস্যদের মধ্যে চাপা দ্বন্দ্ব চলছিল। সেই অশান্তির এদিন বিশাল আকার ধারণ করে। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সূত্রে খবর, তাঁদের না জানিয়েই মঙ্গলবার কলেজে নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল এবিভিপি সদস্যরা। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার কলেজের অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কথা টিএমসিপি সমর্থকদের। সেই কারণে পূর্ব পরিকল্পনামাফিক এদিন সকালে কলেজে হাজির হন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা। কিন্তু কলেজে ঢুকতে গেলেই তাঁদের বাধা দেয় এবিভিপি সদস্যরা। কলেজের গেট আটকে টিএমসিপির বিরুদ্ধে স্লোগানও তোলে তারা। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। অভিযোগ, পুলিশের বিরুদ্ধেও স্লোগান তোলে এবিভিপি সদস্যরা। এবিভিপি, টিএমসিপি ও পুলিশের হাতাহাতিতে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কলেজ চত্বর। বেশ কিছুক্ষণ পুলিশের মধ্যস্থতায় স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। এরপর কলেজের তরফে এক কর্মীকে গেটের বাইরে পাঠানো হয় স্মারকলিপি জমা নেওয়ার জন্য।
এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে অধ্যক্ষকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করান কলেজের তৃণমূলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শুভদীপ সরকার। তিনি বলেন, ‘কলেজের গেটে আটকে আমাদের ডেপুটেশন দিতে বাধা দেওয়া হল। যা এক প্রকার গণতন্ত্রের লজ্জা। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের চেয়ারে বসে কখনোই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া উচিত নয়। অথচ অধ্যক্ষ তাই করছেন। তিনি বিজেপির সঙ্গে যোগসাজোশ করে নবীনবরণ উৎসব করাচ্ছেন। একজন অধ্যক্ষ এটা কখনই করতে পারেন না। বিষয়টি আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে জানাব। প্রয়োজনে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে জানাব।’ যদিও এবিভিপি’-এর নদিয়ার জেলা সভাপতি আশিস বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘যেহেতু ওই কলেজে কোন নির্বাচিত ছাত্র সংসদ নেই, তাই কলেজ কর্তৃপক্ষ-ই নবীনবরণ উৎসব করছে। তবে ওই কলেজের প্রায় সব ছাত্রছাত্রী এখন আমাদের দলে, তাই সবাই মনে করছে ওটা আমরা পরিচালনা করছি। কিন্তু তা ঠিক নয়। এ বিষয়ে ওই কলেজের অধ্যক্ষ সরোজেন্দ্র নাথ কর জানিয়েছেন, ‘ডেপুটেশন দেওয়ার জন্য আমার কাছে কোন তারিখ বা সময় নেওয়া হয়নি। আমি এখনও পর্যন্ত মেইলও পাইনি। তবু পুলিশ আমাদের ডেপুটেশন নেওয়ার কথা বলেছিল। তাই একজন কর্মীকে পাঠিয়ে ডেপুটেশন নেওয়া হয়েছে। যে ধরণের অভিযোগ তৃণমূলের তরফে করা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.